প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা নৌ থানার ভেতরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)। রোববার (২৩ জুন) বিকেলে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা নৌ থানার ভেতরে ওই কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হন
গুলিবিদ্ধ কর্মকর্তার নাম মোক্তার হোসেনের (৪৫)। তিনি প্রায় দুই বছর ধরে ইলিশা নৌ থানায় কর্মরত। তার বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। রোববার গভীর রাতে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ সহকারী উপ-পরিদর্শক মোক্তারের অস্ত্রোপচার হয়। একটি গুলি তার পেটের এক দিক দিয়ে ঢুকে আরেক দিক দিয়ে বের হয়ে গেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
অপরদিকে হাসপাতালে অবস্থানকালে পুলিশ সদস্যের গুলিবিদ্ধের ঘটনায় বিষয়ে পূর্ব ইলিশা নৌ থানার পরিদর্শক (ওসি) বিদ্যুৎ কুমার বড়ুয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুই বলবেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এর আগে তিনি সাংবাদিকদের দেখে সার্জারি বিভাগের অপারেশন থিয়েটার রেখে গাইনি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে সেখানে গণমাধ্যম-কর্মীরা গিয়ে তার কাছে বক্তব্য চাইলে তিনি এসপির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বরিশাল অঞ্চলের পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন জানান, ভোলার পূর্ব ইলিশা নৌ থানার এএসআই মোক্তার হোসেন ও একজন ফোর্স ডিউটিতে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ওই ঘটনা ঘটে। ওই সময় থানার একটি টেবিলের ওপর চারটি পিস্তল রাখা ছিল, যেখান থেকে এএসআই মোক্তার হোসেন একটি পিস্তল পছন্দমতো নিয়ে যাবেন। পিস্তলটি নেয়ার সময় ট্রিগারে হাত পড়ে যায় এবং মিস ফায়ার হয়। আর এতেই গুলিটি তার গায়ে লাগে।
তিনি আরও বলেন, গুলিটি পেটের ডান পাশ থেকে লেগে কোমরের কাছাকাছি বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার অপারেশন করেছে। দোয়া করবেন সে যেন সুস্থ হয়ে যায়।
ডিউটি সংক্রান্ত বিষয়ে অসন্তোষ নিয়ে থানার পরিদর্শক বা অন্য কারও সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে এ ঘটনা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। সে স্বাভাবিকভাবে ডিউটিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় ওই ঘটনা ঘটেছে, আমি নৌ পুলিশের সুপার হিসেব সঠিক তথ্যই উপস্থাপন করছি।
তিনি বলেন, আহত পুলিশ সদস্যের বাড়ি চট্টগ্রামে আর কাপ্তাই লেকে তার ডিউটি পরেছিল। আমাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা দায়িত্ব পালন করতে হয়, যেটা স্বাভাবিক বিষয়। আর কাপ্তাই লেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, সেখানে আমাদের অনেক সদস্যের প্রতিবছর দায়িত্ব পরে। রোববার কাপ্তাই লেকের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবে বলেও সে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আর এটি কোন বদলি নয়, সে ওই জায়গায় দায়িত্ব পালন করে আবার এখানেই ফিরে আসতো।
এদিকে যে অস্ত্রটি থেকে গুলি বের হয়েছে সেটি লোড করা কেন ছিল, আর কে করলো জানতে চাইলে এসপি বলেন, পিস্তলটি লোড কীভাবে কেন হয়েছে সেটি তদন্তের বিষয়টি আর সে (পুলিশ সদস্য) কেন অসতর্কতা অবস্থায় এটি ধরল সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। অন্য কোন ঘটনা নয়, কেন মিস ফায়ার হলো সেটি অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।
আর সেফটি লক করা থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সেফটি লক করা থাকলে তো গুলি বের হয়ে আসতো না।
আপাতত পুলিশ সদস্য মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন দোয়া করুন সে জন্য সুস্থ হয়, তারপর আমরা সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখবো।