প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
শ্যামপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ। রপ্তানির আগে কাঁচাপণ্যের মান যাচাই ও প্যাকিংয়ের সুবিধার জন্য এই ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০২১ সালে নেয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৫৮ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ এর জুন।
নিয়মনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরই অর্থ ছাড় করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। কিন্তু এখানে হচ্ছে উল্টোটা। এই যেমন ৩০ হাজার ৬১৭ স্কয়ার ফিটের ৬তলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। মাত্র পাইলিংয়ের ক্যাপের কাজ শুরু হয়েছে কিন্তু এরইমধ্যে সিভিল ওয়ার্কের ১২ কোটি টাকার মধ্যে ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মার্ল্টিবিজ ইন্টারন্যাশনাল।
জুন মাসের ১১ ও ১৯ তারিখ দুইটি ভাউচারের মাধ্যমে এই অর্থ ছাড় করা হয়। যেখানে দেখা যায়, ডরমেটরি নির্মাণই হয়নি অথচ এর নানাবিধ খরচে দেখানো হয়েছে ওই হিসাবে।
যেই ল্যাবরেটরিকে আধুনিকায়নের জন্য করা হচ্ছে এতোকিছু সেখানেও রয়েছে গরমিল। যেমন, কেন্দ্রীয় এই প্যাকিং হাউজের টক্সিকোলজি ল্যাবে নতুন ১৮টি মেশিন সরবরাহ করার কথা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কার্নেল ইন্টারন্যাশনালের। মেশিন সরবরাহ হয়েছে ঠিকই তবে তা কাগজে, বাস্তবে নয়। অথচ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এবাবদ ছাড় হয়ে গেছে ১১ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা।
ভবনের পাইলিং ছাড়া কোন কিছুইতো দৃশ্যমাণ না। তারপরও কিভাবে প্রথম-দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত বিলে সাক্ষর করলেন; এমন প্রশ্নের কোন সদত্তুর দিতে পারেন নি প্রকল্প পরিচালক এস, এম, খালিদ সাইফুল্লাহ। নয়-ছয় বুঝিয়ে তিনি বলেন, আমরা সরজমিনে দেখেই দিয়েছি।
দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের একটি মার্ল্টিবিজ ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার মো. ইকবালের সাথে যোগাযোগে চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি কাজ পাওয়ার জন্য নিজ প্রতিষ্ঠানের যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে তাও ভুয়া।
কার্নেল ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুদ্দহার দাবি, এখনও সব মালামাল দেয়া হয়নি। যতোটুকু বিল পাওয়া গেছে ততটুকু মালামাল পৌঁছেছে।
যদিও প্রকল্প পরিচালকের দাবি করেছেন, টক্সিকোলজি ল্যাবের সব মালামাল পৌঁছেছে। তবে সোমবার (৮ জুলাই) চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরা শ্যামপুরের প্রকল্প গেলে তড়িঘড়ি করে পরেরদিন মঙ্গলবার রাতে কয়েকটি বাক্স নেয়া হয়।