প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
কোটা সংস্কারের দাবিতে রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কোটা আন্দোলনের সমন্বায়ক নিহত হয়েছেন। নিহত শিক্ষার্থীর নাম আবু সাঈদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি জেলার পীরগঞ্জের খালাশপীরে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার(১৬ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকা থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যান। পরে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। ভাংচুর করা হয় পুলিশ ভ্যানহসহ বেশ কিছু যানবাহন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে শিক্ষার্থী আবু সাঈকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
এর আগে সকাল থেকে কোটা বিরোধী বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গেটে অবস্থান নেয় পুলিশ। ছাত্র লীগ, যুব লীগ ও পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংর্ঘষ বাধে শিক্ষার্থীদের। আন্দোলনকারীদের ইটপাটকেলের ঢিল বৃষ্টির মত ঝরে। সহপাঠির মৃত্যুর খবরে ফুঁসে ওঠে আন্দোলনকারীরা। হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে নগরিতে বিক্ষোভ করেন। হাজারো শিক্ষার্থীর চাপে পিছু হাটে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুব লীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দুই গেট ভেঙে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। যদিও মরদেহ ছিনিয়ে নেয় পুলিশ।
এদিকে, সংঘর্ষেও ঘটনায় গুরুত্ব আহত হয়েছেন পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ শতাধিক মানুষ। আহত বাংলাভিশনের ক্যামেরাপার্সন ও টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ নেওয়াজ জনি জানিয়েছেন, দায়িত্ব পালনের সময় আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে ছোড়া পুলিশের রাবারবুলেট তার মাথায় লাগে। এতে তার মাথা ফেটে যেয়ে রক্ত ক্ষরন শুরু হলে জরুরি অবস্থায় নেয়া হয় রংপুর মেডিকেলে। একইভাবে গুরুত্বর আহত হন বাংলাভিশনের সাংবাদিক জুয়েল আহমেদ, এনটিভির ময়নুল ইসলাম, প্রথম আলোর ময়নুল হোসেন, ফটো ফটোগ্রাফার রাব্বী, উদয় চন্দ্র।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের হাতে নির্যাতনে শিকার হন সময় টেলিভিশনের রির্পোটার জীবন, রেদোয়ান হিমেল, ক্যামেরাপার্সন তরিকুল ইসলাম। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আন্দোলকারীরা অবরুদ্ধ করে রাখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসকে।