শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্ববৃহৎ হামলা খুলনায় বেড়েছে পাটের আবাদ আফগানিস্তান সীমান্তে ৩০ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তানি সেনারা সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে অবৈধ মাছ শিকার: বিপুল পরিমাণ মাছ ও সরঞ্জাম জব্দ। ভিপি নুরসহ ২৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের নির্দেশ সার্বিয়ান ভিসাসহ ২০ বাংলাদেশি পাসপোর্ট উদ্ধার, ভারতীয় ট্রাকচালক বেনাপোলে আটক। খুলনায় পথশিশুদের নিয়ে এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন। প্রশ্নে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি, বাতিল হলো পরীক্ষা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফের চালু করলো যুক্তরাষ্ট্র জুলাই শুধু বিপ্লবের না, হান্নান মাসউদের মতো ধান্দাবাজদের কপাল খোলার মাস : নির্ঝর এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, ভয় দেখানোর জন্য: নাহিদ ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালতে দুইজনকে দণ্ড দেওয়ায় থানায় হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত ২০ বিচারিক আদেশে জামায়াতের পুরনো নিবন্ধনই বহাল, গেজেট প্রকাশ করল ইসি। জাতীয় সমাবেশ সফল করতে বৈঠক ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান; গোলাম পরওয়ারের। বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে রাজনৈতিক ঐকমত্য : অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বরিশালে যুগান্তর ব্যুরো প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা ; বিএমএসএফের প্রতিবাদ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান: ‘কেএনএফ’-এর শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ দুইজন নিহত। শার্শা সীমান্তে ৭ কোটি টাকার স্বর্ণ ও ভারতীয় পণ্য উদ্ধার, আটক ১২ বিএনপির দফা নয়, অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান ও অ্যাকশন চাই: সারজিস আলম আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি

সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ১৮১
আপডেটঃ বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের কাছেও আবেদন করেছি, আন্তর্জাতিকভাবেও বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে দেশে-বিদেশে তাদের কাছেও আমরা সহযোগিতা চাই যে এই ঘটনার যথাযথ সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং যারা এতে দোষী তাদের সাজার ব্যবস্থা হোক।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কারণ, আমি জানি এতে আমার কোন ঘাটতি ছিলনা।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় মৎস সপ্তাহ-২০২৪’ এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনার তদন্তে আমরা ইতোমধ্যেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কারণ, দাবির অপেক্ষা আমি রাখিনি। তার আগেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে দিয়ে দিয়েছি ।
শেখ হাসিনা বলেন, আগে একজন বিচারপতি দিয়ে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছিলাম। এখন আরো দুইজন লোকবল বৃদ্ধি করে তাদের তদন্তের পরিধি আরো বাড়ানোর জন্য তাঁর নির্দেশ প্রদানের কথাও জানান তিনি।
তিনি বলেন, সেইসঙ্গে আমরা জাতিসংঘের কাছেও আবেদন করেছি, আন্তর্জাতিকভাবেও বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে দেশে-বিদেশে তাদের কাছেও আমরা সহযোগিতা চাই যে এই ঘটনার যথাযথ সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং যারা এতে দোষী তাদের সাজার ব্যবস্থা হোক।
তিনি বলেন, কারণ আমি জানি এতে আমার কোন ঘাটতি ছিলনা।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা আলোচনায় বসেছিল (আন্দোলনকারি) তাদের সঙ্গে বার বার আলোচনা করেছি এবং তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। দাবি মানবো কী যেটা আমিই বাতিল করে দিয়েছি। এটাতো আমারই (কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন) ইস্যু করা। আপিল করা হয় আপিল বিভাগে এবং সেখানে হাইকোর্টের রায় (কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বাতিল) স্থগিত করে দিয়ে আপিল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ শুনানির তারিখ নির্দিষ্ট করে দেয়। কাজেই কোটা না থাকায় আমার জারি করা প্রজ্ঞাপনটাই আবার কার্যকর হয়। পরে আপিল বিভাগে থেকে সেটার রায়ও দিয়ে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আন্দোলনের নামে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, ধবংসাত্মক কাজ করা হয়েছে তাতে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে গেছে।
তিনি বলেন, জানি না অপরাধটা কী ছিল আমার? যে ইস্যুটা নেই সেটা নিয়ে আন্দোলনের নামে এই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করে দেশের অর্জনকে নষ্ট করা, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করাতে কে কী অর্জন করলো সেটাই আমার প্রশ্ন?
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর কাছে ক্ষমতা কোন ভোগের বস্তু নয়, তিনিতো আরাম আয়েশ করার জন্য ক্ষমতায় অসেন নি। দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন দেশকে একটু উন্নত করতে। যেটা তিনি সফলভাবে করতে পেরেছিলেন।
‘আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সেই মর্যাদাকে কেন নষ্ট করা হলো?’ সে প্রশ্ন উত্থাপন করে এর বিচারের ভার তিনি দেশবাসীর কাছে দিয়ে দেন।
’৮১ সালে বাংলাদেশে আসার পর থেকে গুলি, বোমা পুঁতে রেখে গ্রেনেড হামলা করে তার ওপর বহুবার হত্যা প্রচেষ্টার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমিতো জীবনের পরোয়া করিনি। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দেশকে দারিদ্র মুক্ত করার পাশাপাশি ভূমিহীন-গৃহহীনকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়া, অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে মানুষের জীবন যাপনকে আরো সহজ করে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য ছিল। কিন্ত যেসব জিনিষগুলো মানুষকে সেবা দেয় সেগুলোই হামলাকারিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলো।
শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে দেশকে পিছনে টেনে নেওয়ার এই চক্রান্তে যারা জড়িত সেটা আপনাদের খুঁজে বের করা উচিত।’
তিনি বলেন, ঐ ’৭১ এ যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল তাদের চক্রান্ত বারবার আমাদের দেশকে পিছিয়ে নিয়ে গেছে। এটা হচ্ছে সব থেকে কষ্টের, সবচেয়ে দুঃখের।
জাতির পিতার কন্যা বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, আমি যেহেতু স্বজন হারিয়েছি। স্বজন হারাবার বেদনা আমি বুঝি। তাই যারা আপনজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করেছে। স্থাপনা যে ধ্বংস করেছে সেগুলোতো পুনর্গঠন করা যাবে কিন্তু যে প্রাণগুলো ঝরে গেল সেগুলোতো আমরা আর ফিরে পাব না। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৭টি ক্যাটাগরিতে ২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ‘জাতীয় মৎস পদক-২০২৪’ প্রদান করেন। পুরস্কার হিসেবে ৬টি স্বর্ণ, ৮টি রৌপ্য ও ৮টি ব্রোঞ্জ পদক, সম্মাননা স্মারক এবং পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জেলেদের মধ্যে স্মার্ট আইডি কার্ডও বিতরন করেন।
২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি মৎস চাষে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও অনুষ্ঠানে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।
দেশের মৎস খাতের উন্নয়নের ওপর একটি প্রামান্য চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।
মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সংশ্লিস্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার স্বাগত বক্তৃতা করেন।
মৎস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ আলমগীর পুরস্কার প্রদান পর্বটি সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময়ই জাতির পিতা এদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যেমন কৃষি গবেষণা ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছিলেন, পাশাপাশি, জনগণের পুষ্টির অধিকারও নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
জাতির পিতার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেছিলেন, ‘মাছ হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারি সম্পদ।’
শেখ হাসিনা বিস্তীর্ণ সামুদ্রিক এলাকার গভীর সমুদ্র থেকে মাছ আহরণে বেসরকারি খাতকে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, গভীর সমুদ্রে মৎস ও সমুদ্র সম্পদ আহরণে যতরকম সুযোগ সুবিধা লাগে তার ব্যবস্থা সরকার করবে। কারণ, এটা আমাদের কাজে লাগবে।
পাশাপাশি, দেশিও প্রজাতির মাছ যাতে বৃদ্ধি পায় সে গবেষণার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশে^ তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ইলিশ উৎপাদনে প্রথম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে ৪র্থ স্থানে রয়েছে এবং সরকারের উদ্যোগ রয়েছে দেশের গ্রামাঞ্চলের পরিত্যক্ত জলাভূমিগুলোকে কাজে লাগিয়ে মৎস উৎপাদন বাড়ানোর। পাশাপাশি, বদ্ধ জলাশয়ে চাষের মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে ৫ বছর বিশে^ পঞ্চম স্থান ধরে রেখেছে।
তিনি সংশ্লিষ্ট মহলকে আরো উদ্যোগী হয়ে এই অবস্থানকে আরো এগিয়ে নিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং বলেন, মাছ চাষীরা যাতে মাছের ন্যায্যমূল্য পেতে পারে সে পদক্ষেপও সরকার ইতোমধ্যে নিয়েছে।
তিনি মাছ ও মৎসজাত পণ্য রপ্তানিতে ভ্যালু এডেড করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করে মৎস প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
দেশে তিনটি টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠাসহ মৎস খাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে সরকার প্রধান বলেন, এগুলো শুধু আমাদের দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদাই পূরণ করবে না, জীবন-জীবিকার মানও উন্নত করবে এবং আমরা রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশকে আরো সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারবো।
তিনি বলেন, আমি এটুকুই বলবো, বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই ধারাটা যেন অব্যাহত থাকে। সেজন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com