প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে আসামিদের বের করে নিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবরে সাতক্ষীরা শহরে আনন্দ মিছিল করে বিভিন্ন স্থানে ও আওয়ামী লীগের অফিসসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে জেলা কারাগারেও হামলা চালানো হয়। একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের প্রধান ফটক ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় কারারক্ষীরা কারাগারের গেট খুলে দিলে তারা ভিতরে ঢুকে হাজতি ও কয়েদিদের সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে সহযোগিতা করে।
সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের জেলার হাসনা জাহান বিথী বলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাতটা সাড়ে সাতটার দিকে একদল দুবৃত্ত জেলখানায় হামলা চালায়। তারা জেলগেটের তালা ভেঙে ১০টি সেলে থাকা আসামিদের বের করে নিয়ে যায়। ওই দশটি সেলে ৫৯৬ জন কয়েদি ও হাজতি ছিল। অনেক কয়েদি ও আসামি মঙ্গলবার ৬ আগস্ট সকাল থেকে কারা কতৃপক্ষের কাছে এসে আত্মসমর্পণ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ফারুক হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কারাগারে এখনো স্বল্প মেয়াদের সাজা আছে এমন কিছু সংখ্যক কয়েদি রয়েছেন।
পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর জানার পর সাতক্ষীরা শহরে আনন্দ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলকারীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও যোগ দেয়। প্রথমে তারা শহরের খুলনা রোড মোড়ে জড়ো হয়। পরে মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় পুলিশ সুপারের বাস ভবনের গেটের গ্লাস ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
পর্যায়ক্রমে সাতক্ষীরা-আসনের এমপি ফিরোজ আহমেদের বাড়ি, এমপি লায়লা পারভিন সেজুতির শশুর বাড়ি, জেলা আওয়ামী লীগের, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদের বাড়ি ও বাস টার্মিনালের পাশে দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার অফিস, দৈনিক পত্রদূত অফিস, কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি বিশ্বজিত সাধু, ব্যাবসায়ী কেশব সাধু, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনত কুমার, খলিলনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান ও তার ভাই আব্দুল হান্নান, অ্যাডভোকেট তামিম আহমেদ সোহাগ, কলারোয়া যুবলীগ নেতা শাহজাদার বাড়ি, শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ কয়েকটি স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে শ্যামনগর থানা, সদর থানা ভবনের দোতলা ও ট্রাফিক অফিসের দোতালার গ্লাস ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ২৫ থেকে ৩০ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
এদিকে এখনও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ লোকজন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।