প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
ঢাকা শহরে সিটি সার্ভিসের পরিষেবা উন্নত করে বাস রুট রেশনালাইজেশন পদ্ধতিতে প্রাধিকার লেইনের ব্যবস্থা করা, নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক থেকে রিকশা, ইজিবাইকসহ ছোট ছোট যানবাহন তুলে দেওয়া ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
রবিবার বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। ‘গণপরিবহন সংকট ঢাকার ভয়াবহ যানজটের মূল উৎস-মুক্তি চাই নগরবাসী’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা, পরিবহনসংশ্লিষ্টরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করায় ভয়াবহ যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। নগরীর এক প্রান্ত থেকে যেকোনো গন্তব্যে যেতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার যানজটে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে কর্মক্ষম মানুষের ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা। বুয়েটের তথ্য বলছে, প্রতি বছর এই যানজটে আর্থিক ক্ষতি পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সংগঠনের মহাসচিব আরো বলেন, রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থা বহু যুগ আগেই ভেঙে পড়েছে। নগরীতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাস রংচটা, বিবর্ণ, লক্করঝক্কর, পেছনের লাইট-ইন্ডিকেটর আর সামনের লুকিং গ্লাস নেই। আসনে দুই পা মেলে বসা যায় না। বাসে উঠা-নামার পাদানি, ধরার হেন্ডেল ভাঙা থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে গাদাগাদি করে যেতে হয়। গরমের দিনে ঘামে ভিজে এবং বর্ষাকালে বাসের ভেতর বৃষ্টিতে ভিজে যবুতবু অবস্থা হয়। কোনো বাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার বালাই নেই। ময়লা-আর্বজনা, ছারপোকা, তেলাপোকায় ভরপুর, মুড়ির টিনের মতো বাসে উঠানামার ভয়াবহ যন্ত্রণা সহ্য করেও সঠিক সময়ে বাস পাওয়া যায় না।
তিনি বলেন, এমন বাস্তবতায় সামর্থ্যবানরা ধার-দেনা করে ব্যক্তিগত গাড়ি কিনছেন। অন্যরা মোটরসাইকেলে রাইডশেয়ারিং, অটোরিকশা, ইজিবাইক পাঠাও-ওবারের মতো ছোট ছোট যানবাহনে স্বাচ্ছদ্যে যাতায়াতের দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে নগরীতে বিশৃঙ্খল বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৪ লাখ প্যাডেলচালিত রিকশা, ৬ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ১ লাখ ৩৪ হাজার রাইডশেয়ারিংয়ের ছোট ছোট যানবাহন, ৩০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা অবাধে যাতায়াতের কারণে নগরীর যানজট ও জনজট চরমভাবে বেড়ে চলেছে। অন্যদিকে, এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক ব্যবস্থা এখনো সেকেলে। আর সরকার পরিবর্তনে পর নগরীর ৪ হাজার ট্রাফিক পুলিশ এখনো নিষ্ক্রিয়। যানজট কমাতে জরুরি ভিত্তিতে অত্যাধুনিক প্রকৌশলগত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা দরকার।