শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১১:২৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
২৬ জুলাই খুলনায় চরমোনাই পীরের গনসমাবেশ ইসালামী আন্দোলনের যৌথসভা  খুলনা ওয়েস্টার্ন ইন হোটেলে নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার কালীগঞ্জে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেষ্টুনীসহ বৃক্ষ রোপন ও অসহায় নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরন খুলনার ওয়েস্টার্ন ইন হোটেল থেকে নারীর লাশ উদ্ধার। উথলীতে ট্রেন লাইনচ্যুত, সারাদেশ থেকে খুলনার রেল যোগাযোগ বন্ধ। তলে তলে ইরানের বিপক্ষে লড়েছে সৌদি, চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস! বরগুনার দক্ষিণ রামনায় গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা, অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নিল দলবল ভারতে অঙ্গ বিক্রি করে বাংলাদেশের একটি এলাকা হয়ে গেল ‘এক কিডনির গ্রাম’ ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্ববৃহৎ হামলা খুলনায় বেড়েছে পাটের আবাদ আফগানিস্তান সীমান্তে ৩০ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তানি সেনারা সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে অবৈধ মাছ শিকার: বিপুল পরিমাণ মাছ ও সরঞ্জাম জব্দ। ভিপি নুরসহ ২৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের নির্দেশ সার্বিয়ান ভিসাসহ ২০ বাংলাদেশি পাসপোর্ট উদ্ধার, ভারতীয় ট্রাকচালক বেনাপোলে আটক। খুলনায় পথশিশুদের নিয়ে এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন। প্রশ্নে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি, বাতিল হলো পরীক্ষা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফের চালু করলো যুক্তরাষ্ট্র জুলাই শুধু বিপ্লবের না, হান্নান মাসউদের মতো ধান্দাবাজদের কপাল খোলার মাস : নির্ঝর এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, ভয় দেখানোর জন্য: নাহিদ ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালতে দুইজনকে দণ্ড দেওয়ায় থানায় হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত ২০

শিবচরে বিভিন্ন নদী থেকে প্রতি রাতে তোলা হচ্ছে কোটি টাকার বালু

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ৫০
আপডেটঃ শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:

মাদারীপুরের শিবচরে বিভিন্ন নদীতে প্রতি রাতে কোটি টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ভেঙে যাচ্ছে বসতভিটা ও ফসলি জমি।অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী, চরচান্দা, কাওলিপাড়াসহ পদ্মা সেতুর দুই-তিন কিলোমিটারের মধ্যেই দিন-রাত চলছে বালু উত্তোলন। এছাড়া কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত ইউনিয়নের পদ্মার চর এলাকার নদী তীরবর্তী চর কেটেও মাটি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে, পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং ও শিবচর সীমান্ত এলাকাতেও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। শিবচরের আড়িয়াল খাঁ নদীর উৎরাইল হাট সংলগ্ন, দত্তপাড়া, নিলখী, শিরুয়াইল এলাকায় বালু উত্তোলন করেন রোমান ফরাজি, মস্তফা মোল্লা, শফিক বেপারী, সুমন খান, আজাদ, লোকমান খানসহ একটি প্রভাবশালী মহল। পদ্মা নদীর কাঁঠালবাড়ী এলাকায় বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেট পরিচালনা করেন আতাহার বেপারী, সোহেল বেপারী, ডাবলু বেপারী, ফারুক বেপারী, জুলহাস বেপারী, বজলু বেপারী, মান্নান বেপারী ও বাবু বেপারী। পদ্মা নদীর চরজানাজাত এলাকায় বালুর সিন্ডিকেট চালায় রায়হান সরকার, শাহিন সরকার, শামিম সরকার, ওয়াসিম সরকার, সোহাগ সরকার, কুডি মিয়া সরকার, মামুন হাওলাদার ও মেম্বার নাসির সরকার। এ ছাড়া নাওডুবা এলাকার পদ্মা নদীতে সিন্ডিকেট চালান আলিম ও মোতাহার ঢালি।

জানা গেছে, বর্তমানে অর্ধশত ড্রেজার বালু উত্তোলনের কাজে সক্রিয় রয়েছে। পদ্মা সেতুর কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের কাওয়ালিপাড়া এলাকার নদীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। ড্রেজার দিয়ে তোলা বালু বাল্কহেডে ভরে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রির উদ্দেশে। প্রতি ঘনফুট বালু পাইকারি বিক্রি করা হয় ৮০-৯০ পয়সা দরে। আর খননের জন্য ড্রেজার মালিক প্রতি ঘনফুটে পান ৬০ পয়সা। খুচরা বাজারে এই বালু বিক্রি হয় প্রতি ঘনফুট ১০-১২ টাকা দরে। ড্রেজারগুলো নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল ও ঝালকাঠিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাড়ায় এনে নদীতে বালু উত্তোলন করা হয়। বিভিন্ন সময় অভিযানে শ্রমিকরা আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন বালু বিক্রয়ের মূলহোতারা ও ড্রেজার মালিক। এদিকে বিভিন্ন সময়ে পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার জব্দ, জড়িতদের আটক ও জরিমানা করা হলেও থেমে নেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।

জানা গেছে, ড্রেজার দিয়ে উত্তোলন করা বালু বাল্কহেড দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে খুচরা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়। শিবচর উপজেলার চরজানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির আওতাভুক্ত থাকলেও মাঝে মধ্যে নামমাত্র অভিযানের খবর পাওয়া যায়। অভিযোগ রয়েছে, ‘অর্থনৈতিক সুবিধা’ প্রাপ্তির বিষয়টি এর সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও প্রশাসনের ‘অভিযান হবে’ এমন খবরও অদৃশ্যভাবে বালু উত্তোলনকারীর কানে পৌঁছে যায় আগে-ভাগেই।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মার তীরবর্তী এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। আগে শুধু রাতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হতো। এখন দিনেও ড্রেজার চলে। প্রশাসনের তৎপরতা দেখলে সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও সুযোগ পেলেই আবার শুরু হয় বালু উত্তোলন। শিবচর ও লৌহজংয়ের কমপক্ষে অর্ধশত ড্রেজার বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

কাঁঠালবাড়ী ও চরজানাজাত এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ও কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা নতুন চরের (বাঘরা সীমানা, চার নং পোল এলাকা) মাটি ড্রেজারের মাধ্যমে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। নতুন জেগে ওঠা চর ফসল উৎপাদনের উপযোগী হলেও বালুখেকোদের কবলে পড়ে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা মেম্বার নাসির সরকার বলেন, চায়না প্রকল্প থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। আগে বালু উত্তোলন করেছি। তবে আমরা এখন বালু উত্তোলন করি না।

ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করেন এমন আরেক ব্যক্তি বলেন, ৩৩টি ড্রেজারের কাগজপত্র (অনুমতি) আছে বালু তোলার। তবে বালু বিক্রয়ের অনুমতি নেই। আমারও একটা ড্রেজার চলে। আমি ৩ লাখ টাকা দিয়ে কাগজ কিনেছি। ৩৩টার বাইরেও ড্রেজার চলে। তবে প্রশাসন অভিযান করলে অতিরিক্ত ড্রেজারগুলো কিছুদিন বন্ধ থাকে। তবে সুযোগ পেলেই সেগুলো আবার চলে। তিনি আরো বলেন, ড্রেজার থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে বালু ফেলার নিয়ম থাকলেও বালু মূলত বাল্কহেড ভরে নিয়ে বিক্রি করা হয়।  তবে ‘অনুমতি কারা দেন বা কাগজপত্র কীসের’ এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

শিবচরের চরজানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির ওসি মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, আমি নতুন এসেছি। আগে ড্রেজার চললেও এখন চলে না। তবে আমি আসার পর পদ্মা নদী থেকে দুটি ড্রেজার জব্দ করেছি। কাউকে অবৈধভাবে ড্রেজার চালাতে দিচ্ছি না। শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আমরা বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর অবস্থানে আছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল হোসেন জানান, অবৈধভাবে যারা বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করি। আমরা বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর অবস্থানে আছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com