প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
দুই জেলার শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধের জেরে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে সব বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজশাহীর পরিবহন শ্রমিকরা নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে অবস্থান নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সঙ্গে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই জেলার যাত্রীরা।শ্রমিকরা জানায়, রাজশাহীর আল-মাহি পরিবহনের চালক সাঈদ হাসানকে সোমবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকরা মারধর করেছে। বিক্ষোভের সময় তিনিও শিরোইল বাসটার্মিনালে উপস্থিত ছিলেন।
ভুক্তভোগী সাঈদ হাসান জানান, গত শনিবার রাতে রাজশাহীর একটি বাসের শ্রমিকদের মারধর করা হয়। এরপর রোববার দুইপক্ষ সমঝোতায় বসেছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকরা আশ্বাস দিয়েছিল, আর মারধর করা হবে না। আগের মতোই রাজশাহীর বাসগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকতে পারবে। কিন্তু সোমবার সকালে সাঈদ হাসান বাস নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গেলে তিনিসহ তার বাসের তিনজন শ্রমিককেই মারধর করা হয়। এ ছাড়া আল নাহিদ নামের রাজশাহীর আরেকটি বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকলে চালক, হেলপারসহ তিনজনকে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি রাজশাহীর ওপর দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে দেওয়া হচ্ছে না ঢাকা রুটে বাসগুলোকেও।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, শনিবার রাতে রাজশাহীর একটি বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন বাসশ্রমিক ছিলেন। ভাড়া চাওয়া কেন্দ্র করে তার সঙ্গে রাজশাহীর বাসের কন্ডাক্টরের কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর বাসটি চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকলে এর চালক, হেলপারসহ তিনজনকেই মারধর করা হয়। একজন রক্তাক্ত জখম হন। এ ঘটনা সমাধানে রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জে দু’পক্ষকে নিয়ে বসে সমঝোতা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহীর শ্রমিকরা কেউ কাউকে মারধর করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু সোমবার সকালে রাজশাহীর দু’টি বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকলে ছয়জন শ্রমিককে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে রাজশাহীর শ্রমিকেরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
পাখি আরও বলেন, বাস বন্ধ রাখলে যাত্রীদের দুর্ভোগ হবে। সরকারের বদনাম হবে। শ্রমিকদের আয়ও বন্ধ হবে। আমরা চাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জ না গেলেও রাজশাহীর গোদাগাড়ী পর্যন্ত বাস চলুক। কিন্তু শ্রমিকেরা বলছে, গোদাগাড়ী পর্যন্ত বাস চালালেও তেলের খরচই উঠবে না। সমস্যার সমাধানের বিষয়টি তারা দেখছেন।
অন্যদিকে রাজশাহীর শ্রমিকদের অভিযোগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম আনার বিষয়টি জটিল করেছেন। তার ইন্ধনে রাজশাহীর শ্রমিকদের মারধর করা হচ্ছে। তবে অভিযুক্ত আনোয়ারুল ইসলাম আনার বলেন, ‘আমরা জাতে শ্রমিক। কথায় কথায় উত্তেজিত হই, মারধরও করি। এভাবেই চলছে। এসব কথা মোবাইলে বলা যাবে না। সামনাসামনি বসলে বুঝিয়ে বলতে পারতাম।’