প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
বিএসসির দুই জাহাজে আগুন লাগার ঘটনা নাশকতা নয় উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে আগুন লাগার তিনটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে এ প্রতিবেদন জমা হয়েছে।তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা কোনো নাশকতা নয়। নাবিক ও বিএসসির দায়িত্বরত ব্যক্তিদের অদক্ষতা, অসতর্কতা ও অবহেলার কারণে জাহাজে আগুন ধরেছে। জাহাজের রশি ছিঁড়ে গ্যাস পাইপ খোলার পরেও আগুন লাগার আগে অন্তত ৩০ মিনিট সময় পেয়েছিল ক্রুরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার। তবে তাদের গা-ছাড়া ভাবের কারণে সৃষ্ট আগুন ভয়ংকর রূপ নিয়েছিল। এতে আরও বলা হয়, তীব্র ঢেউয়ে রশি ছিঁড়ে গ্যাস পাইপ খোলার পর স্পার্ক থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। দুটি জাহাজে ৫০ জনের বেশি নাবিক-ক্রু থাকলেও ঘটনার সময় সক্রিয় ছিলেন মাত্র ৬ জন। এছাড়া, লাইটার জাহাজ সোফিয়া থেকে একাধিকবার সহায়তা চেয়ে বার্তা পাঠানো হলেও মাদার ভ্যাসেল নিকোলাস তাতে সাড়া দেয়নি বলেও অভিযোগ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, জাহাজে আগুন লাগার বিষয়টি নিছক দুর্ঘটনা। তদন্তে ধ্বংসাত্মক কোনো কিছুর আলামত পাওয়া যায়নি। তবে ক্রুরা ঘটনার সময় তেমন সক্রিয় ছিলেন না।
গত ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে তেল খালাসের সময় বাংলার সৌরভ এবং তার আগে ৩০ সেপ্টেম্বর ডলফিন জেটিতে বাংলার জ্যোতি নামে দুটি জাহাজ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাত্র ১৩ দিনের ব্যবধানে চারটি তেল ও এলপিজি বহনকারী জাহাজে আগুন লাগার ঘটনায় নাশকতার আশংকাটি সামনে আসে।
তবে এখন পর্যন্ত বাংলার জ্যোতি ও বাংলার সৌরভে নাশকতার কোনো প্রমাণ মেলেনি। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেন, জাহাজ দুটিতে আগুন লাগার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জ্বালানি বহনকারী জাহাজে এ ধরনের লাগাতার আগুনের ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ এ খাতকে হুমকির মুখে ফেলছে বলে জানায় নৌ অধিদফতর। চট্টগ্রাম নৌবাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির আহমেদ বলেন, জ্বালানি বহনকারী জাহাজে এ ধরনের লাগাতার আগুনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, বিদেশ থেকে আমদানি করা জ্বালানি এবং ভোজ্যতেল চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হি নোঙরের পাশাপাশি নগরীর পতেঙ্গা এলাকার নিউ মুরিং এবং গুপ্তখাল এলাকার উপকূলে খালাস করা হয়।