প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
বেশি দিন আগের কথা নয়, সবশেষ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলোর ম্যাচে স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল পর্তুগাল। সেই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করে শিশুর মতো কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নে এসে এখনো ফুটবলের প্রতি যে নিবেদন এই মহাতারকার, তা প্রত্যেক তরুণ ফুটবলারের জন্য অনুপ্রেরণা।কয়েক মাস পরে ৪০ বছরে পা দিবেন ফুটবলের এই মহারথি। তবে এখনো বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে যখন হানা দেন এই তারকা, তখন তাকে দেখে বুঝার অবকাশ নেই যে, তার ক্যারিয়ারের সূর্য গোধূলি লগ্নে নাকি মধ্যগগনে। ফুটবলের প্রতি রোনালদোর এই নিবেদন খুব কম ফুটবলারের মধ্যেই দেখা যায়।
এবার ফুটবলের এই মহাতারকা সম্পর্কে দারুণ এক তথ্য দিয়েছেন তার সতীর্থ ব্রুনো ফার্নান্দেস। রোনালদো নাকি খুব ভালো নাচতে পারেন। সম্প্রতি রোনালদোর ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রুনো ফার্নান্দেস বলেছেন, ‘আমি মনে করি এমন অনেক জিনিস আছে রোনালদোর সম্পর্কে, যা অনেকেই জানে না। তিনি কেমন সেটা জানার জন্য আপনাকে সর্বদা তার আশেপাশে থাকতে হবে। তিনি অনেক ভালো নাচতে পারেন।’ কাতার বিশ্বকাপের থিম সং আর ফিফা ফ্যান ফেস্টিভালের অংশ হয়ে মরক্কো বংশোদ্ভূত নৃত্যশিল্পী নোরা ফাতেহি সারা বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি রোনালদোর সঙ্গে নাচার আগ্রহও প্রকাশ করেছিলেন। তিনি আশা করেছিলেন, এই ফুটবলার খুব ভালো নাচতে পারবে। তার সেই ধারণা যে
সত্য ছিল, তা ব্রুনো ফার্নান্দেসের কথায় প্রমাণ পাওয়া গেল।
বর্তমানে ক্লাব এবং জাতীয় দল মিলিয়ে রোনালদোর গোল সংখ্যা ৯০৮টি। ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। গেল মাসে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ১ হাজার গোল করেই ইতি টানবেন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। গেল সোমবার পর্তুগালের বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদদের পুরস্কার ‘কুইনাস ডি প্লাটিনা’ জিতেন পাঁচ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই ফুটবলার। পুরস্কার জয়ের পর রোনালদো জানিয়েছেন, এখন আর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করছেন না তিনি। তার এমন কথায় আঁচ পাওয়া যায় যে, যখন-তখন ফুটবলের ইতি টানতে পারেন এই কিংবদন্তি। আল নাসর তারকার এমন কথার পর ফুটবল বিশ্বে শুরু হয়েছে গুঞ্জন, আর কতদিন সবুজ গালিচায় দেখা যাবে এই মহারথিকে।
রোনালদোকে নিয়ে বার্নাডো সিলভা বলেন, ‘তার সাথে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। আমরা ১০ বছর আগে প্রথম একসাথে খেলেছিলাম। আমি যখন জাতীয় দলে খেলা শুরু করি তখন প্রথমবার ট্রেনিং ক্যাম্পে এসেছিলাম, আমি জানতাম না কোথায় বসতে হবে। একটি আসন ফাঁকা ছিল এবং কিছু সিনিয়র খেলোয়াড় আমাকে সেই আসনে বসতে বলেছিলন। তখন আমি সেখানে বসে পড়ি। আমি জানতাম না সেখানে রোনালদো বসেন। সে সময় সেখানে রোনালদো আসেন এবং আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকেন। আমি তখন সেই আসন থেকে উঠে গিয়েছি। তখন রোনালদো আমাকে বলেন, তুমি এখানে বসতে পারো। তখন আমার বয়স ছিল ২০ বছর। সে সময় আমি বুঝেছি রোনালদো মানুষ হিসেবে কেমন।’
রোনালদোকে নিয়ে ম্যানসিটির এই তারকা আরো বলেন, ‘আমি মনে করি মানুষ জানে যে তিনি খুবই শৃঙ্খলাবদ্ধ। তিনি সঠিক সময়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। তবে তিনি খাওয়ার বিষয়ে খুবই সতর্ক। তিনি কেবল দুপুরের এবং রাতের খাবার খান। তিনি নাশতা করেন না। এই বিষয়ে তার সম্পর্কে আমার একটি ভালো কৌতূহল জন্মায়।’ রোনালদোকে নিয়ে তার আরেক সতীর্থ ব্রুনো ফার্নান্দেস বলেন, ‘এটা মজার কিন্তু আবেগপ্রবণও বটে। আমি যখন প্রথম জাতীয় দলে আসি তখন আমি এমন খেলোয়াড়দের নিজের সামনে দেখি, যাদের আমি টিভিতে দেখতাম এবং অনেক প্রশংসা করতাম।’
ব্রুনো আরো বলেন, ‘আমি তখন লাজুক ছিলাম। কারও সাথে তেমন কথা বলতাম না। আমি মাথা নিচু করে সবার সাথে হ্যান্ডশেক করি। তখন সেখানে রোনালদো ছিলেন না। কারণ আমি অনেক আগেই সেখানে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর তিনি সেখানে আসেন এবং আমার সাথে কথা বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন আমি তোমার খেলা দেখেছি, তুমি গোল করেছ। তুমি অনেক ভালো খেলেছ।’