বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
মোংলা বন্দরে ২০২৪–২৫ অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রা পূরন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন: খুলনা বিভাগীয় কমিশনার। যশোর বোর্ডে এসএসসিতে পাসের হার ৭৩.৬৯ শতাংশ জনগণও যেনতেন নির্বাচন করতে দিবে না : জেএসএফ বাংলাদেশ। টেক্সাসের ভয়াবহ বন্যায় শতাধিক মৃত্যুঃ ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইউএসএ-এর গভীর শোক প্রকাশ। কবি এডভোকেট সুফিয়ান আহমদ চৌধুরী’র ৬৫তম জন্মবার্ষিকী ১৭ জুলাই বৃহস্পতিবার। কিশোরগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সাতাশতম বার্ষিক চড়ুইভাতি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত। বীরগঞ্জে অনিয়মের দায়ে দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৮.৪৫ ৩৫% মার্কিন শুল্ক: প্রথম দিনের আলোচনা শেষে ইতিবাচক উভয়পক্ষ হাসিনার গুলির নির্দেশের ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং যেভাবে যাচাই করেছে বিবিসি বরগুনায় বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান জেল হাজতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ আজ সারজিস আলমের বক্তব্যের বিষয় আপনার মতামত কি? ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে কী করবেন জামালপুরে ভেঙে ফেলা হচ্ছে ‘বিজয় চত্বর’, স্থাপন হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ সালথাজুড়ে গরু চুরির হিড়িক, আতঙ্কে খামারিরা প্রতিটি ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে ; খুলনা মহানগরী আমীর।

এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ৩৪
আপডেটঃ সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সরকার-গৃহীত কার্যক্রমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের টেকসই উন্নয়নের ‘থ্রি-জিরো’ তত্ত্ব যুক্ত করার চিন্তা করছে সরকার। সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে এই তত্ত্বের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।‘থ্রি-জিরো’ তত্ত্ব আর্থিক স্বাধীনতা, কর্মঠ জনশক্তি তৈরি এবং পরিবেশ উন্নয়নে বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকর একটি মডেল। এটি একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। সেগুলো হচ্ছে—জিরো দারিদ্র্য, জিরো বেকারত্ব ও জিরো নেট কার্বন নিঃসারণ। আর তা অর্জনে প্রয়োজন তারুণ্য, প্রযুক্তি, সুশাসন ও সামাজিক ব্যবসা।

গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব জুড়ে আলাদা সম্মান পেয়েছেন তার এই থ্রি-জিরো তত্ত্বের জন্য। এসডিজির লক্ষ্যসমূহের মূল পরিকল্পনায় রয়েছে—সকলের জন্য কল্যাণকর পৃথিবী এবং টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণ।

‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ বাসসকে বলেন, ‘আমরা এসডিজির সঙ্গে থ্রি জিরো তত্ত্ব যুক্ত করার চেষ্টা করছি। এসডিজির ওপর সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে আমাদের একটি কর্মশালা চলছে, সেখানে এই তত্ত্বের বিষয়ে আলোচনা করছি। আমরা চাই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে সব পর্যায়ে থ্রি জিরো তত্ত্বের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি  হোক।’তিনি উল্লেখ করেন, ‘এসডিজির লক্ষ্য পূরণের কার্যক্রমের মধ্যে থ্রি জিরো তত্ত্ব রাখা হয়েছে, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কারোর ওপর এই তত্ত্বের প্রয়োগ চাপিয়ে দিতে চান না। আমাদের উদ্দেশ্য হলো—যার ভালো লাগবে তিনি এটি গ্রহণ করবেন এবং কাজে লাগাবেন। এ কারণে এসডিজির বাইরে সরকারের কোনো বড় পর্যায়ে থ্রি জিরো তত্ত্ব নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’

থ্রি জিরো তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো—দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসারণ শূন্যে নামিয়ে আনা। এই তত্ত্বের ব্যাপারে অধ্যাপক ইউনূসের ভাষ্য, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিজেই দারিদ্র্য সৃষ্টি করে এবং এই ব্যবস্থার অধীনে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব নয়। মানুষ এককভাবে দারিদ্র্য তৈরি করে না, আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোর ভেতরেই তৈরি হয় দারিদ্র্য।’ তার মতে, ভালো চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা তৈরিতে জোর দিতে হবে। তিনি বিভিন্ন সময় তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমরা জন্মেছি সমস্যা সমাধানের জন্য, কারো অধীনে চাকরি করার জন্য নয়। তাই তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে হবে। কারো অধীনে নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েই।’সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে বাসযোগ্য নিরাপদ পৃথিবী ও নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বকে বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরেছেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি সম্মেলনে নিজের ভাষণে এই তত্ত্ব উপস্থাপন করে বলেছেন, এটি এক নতুন সভ্যতার জন্ম দেবে। গড়ে তুলবে এক নতুন পৃথিবী, যা সবার জন্য বাসযোগ্য হবে।

ইউনূস সেন্টারের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা লামিয়া মোরশেদ বলেন, ‘সারা পৃথিবী জুড়ে বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার ৬০০টি থ্রি জিরো ক্লাব রয়েছে, যার প্রতিটি অধ্যাপক ইউনূসের নতুন সভ্যতার স্বপ্নে অনুপ্রাণিত। এসব ক্লাবের বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গড়ে উঠেছে।’

বিশ্বের অসংখ্য বিভিন্ন নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্রি জিরো ক্লাব গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে এই ক্লাব সমানভাবে গড়ে ওঠেনি।এ বিষয়ে লামিয়া মোরশেদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাংলাদেশে থ্রি জিরো ক্লাব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল, এখন সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ায় দিনদিন এর পরিসর বাড়ছে। এখন অনেকে এগিয়ে আসছেন। বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’তিনি জানান, থ্রি জিরো ক্লাব ইচ্ছে করলেই কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না, এক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয় দেখা হয়। তারা যে কাজগুলো করছে, সেগুলো গুরুত্ব সহকারে করছে কি না এবং সেটি টেকসই কি না, এসব দেখার পরই রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়।

এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আরো বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের সামাজিক ব্যবসার মূল থিম হচ্ছে—‘এখান থেকে আমি কোনো লাভ করব না, তবে আমার মূল টাকা ফেরত আসতে হবে। যাতে করে ঐ অর্থ আবার অন্য আরেকটি সামাজিক কার্যক্রমে ব্যবহার করা যায়। মুহাম্মদ ইউনূস আগে থেকেই বলতেন, মাইক্রোক্রেডিটের সঙ্গে সামাজিক কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। সামাজিক কার্যক্রম মনকে অনেক তৃপ্তি দেয়, কারণ এতে মানুষ অনেক উপকৃত হয়।’লামিয়া মোরশেদ জানান, আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় যুব সম্মেলনে (ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল) থ্রি জিরো বিষয়টা রাখা হবে। খেলাধুলা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিনোদনের অংশ হিসেবে কাজ করে, এটাকে কীভাবে সামাজিক কার্যক্রমের অংশ বানানো যায়, সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।কমনওয়েলথ সচিবালয়ের আন্তর্জাতিক ট্রেড বিভাগের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা সংস্থা ‘রেপিড’-এর চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, “টেকসই উন্নয়নের সব সূচকে অভীষ্ট অর্জনের ক্ষেত্রে ‘থ্রি জিরো থিউরি’ অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com