প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
১৭ বছর আগে ২০০৭ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে এক বৈঠকে নিজের পোষা কুকুরকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। তবে পুতিনের কুকুরের উপস্থিতি অস্বস্তিতে ফেলেছিল অ্যাঞ্জেলা মার্কেলকে।পরে মার্কেল জানিয়েছিলেন, বৈঠকের কক্ষে পুতিনের কুকুরের উপস্থিতি তাকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। যদিও ঘটনার পরে পুতিন ক্ষমা চেয়েছিলেন। তবে সেই প্রসঙ্গ ফের উঠে এসেছে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) পুতিনের কাজাখস্তান সফরের সময়।জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে কুকুরের কামড়ের পর থেকে ম্যার্কেল কুকুরকে ভয় পান। ২০০৭ সালে রাশিয়ার সোচিতে পুতিন ও মার্কেলের বৈঠকে পোষা কুকুর ‘ল্যাব্রাডর কোনি’ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য প্রবেশ করেছিল।সম্প্রতি প্রকাশিত আত্মজীবনী ‘ফ্রিডম’-এ ম্যার্কেল লিখেছেন, ঘটনার পর পুতিন বিবৃতিও দিতে চেয়েছিলেন।
ম্যার্কেল লিখেছেন, পুতিন এবং আমি তখন আমাদের বৈঠকের শুরুতে ফটোগ্রাফার এবং ক্যামেরাম্যানদের জন্য বসে পোজ দিচ্ছিলাম, যাতে তারা আমাদের ছবি তুলতে পারে। আমি কুকুরটিকে উপেক্ষা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে আমার ঠিক পাশেই নড়াচড়া করছিল।ম্যার্কেল আরও লিখেছেন, আমি পুতিনের মুখের অভিব্যক্তিকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেছি, তিনি পরিস্থিতি উপভোগ করছেন। তিনি কি শুধু দেখতে চেয়েছিলেন যে একজন দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়? এটা কি ক্ষমতার ক্ষুদ্র প্রদর্শনী? আমি শুধু নিজে ভেবেছিলাম: শান্ত থাকুন, ফটোগ্রাফারদের দিকে মনোনিবেশ করুন, এটি (ভয়) দূর হয়ে যাবে।
এরপর ২০১৬ সালে জার্মান ট্যাবলয়েড বিল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন সংক্ষেপে জানিয়েছিলেন, তিনি এরই মধ্যে ম্যার্কেলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কেননা তিনি জানতেন না ম্যার্কেল কুকুরে ভয় পান।এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার কাজাখস্তান সফরের সময় এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন পুতিনকে। জবাবে তিনি জানান, ২০০৭ সালের বৈঠকের আগে ম্যার্কেলের কুকুরের ভয় সম্পর্কে তিনি জানতেন না।তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি যদি এটি সম্পর্কে জানতাম, তবে আমি কখনই এটি করতাম না।পুতিন জানান, তিনি একটি স্বাচ্ছন্দ্যময়, মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির আশা করেছিলেন। কেননা জার্মানিতে নিজের বসবাসের অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছে, সেখানকার লোকেরা পোষা প্রাণীর প্রতি খুব ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি ভেবেছিলাম সে এটা উপভোগ করবে। পরে জানতে পারি সে কুকুরকে ভয় পায়। তবে যখন আমি জানতে পেরেছি, আমি তার কাছে ক্ষমা চেয়েছি।যদিও রুশ নেতা পরবর্তীতে সরাসরি ম্যার্কেলের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন ক্ষমা চেয়ে। ‘অ্যাঞ্জেলা, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি কোনোভাবেই কষ্ট দিতে চাইনি। তুমি যদি কখনো রাশিয়ায় আসো – আমি বুঝতে পারছি আজকের দিনে এমন হওয়ার সম্ভাবনা নেই– আমি এটা আর করবো না।’