বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আগাম জাতের আমন ধান পুরাদমে কাটামাড়াই শুরু হয়েছে আমন ধানের বাম্পার ফলন দাম পেয়ে খুশী কৃষকেরা। গতকাল বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে মাঠে মাঠে কৃষক কৃষানিরা ধান কাটা প্রায় শেষ করছে। এ উপজেলায় প্রায় ১ মাস আগেই থেকে মাঠজুরেই পেকে আছে আমন ধান। ব্রি-ধান বিনা ধান সহ স্থানীয় অনেক জাতের ধান ইতোমধ্যে কেটেছে কৃষকেরা নতুন ধান কেটে বাড়িতে আনায় নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে সৌরভ ছড়াচ্ছে কৃষকের ঘর। নতুন ধান কেটে মাড়াই করে খড়ের দামও পাঁচ্ছে কৃষক। আর গবাদি পশু খামারিরা চাহিদা অনুযায়ী খড় সংগ্রহ করছে। চাষিরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করচ্ছে নতুন ধানের খড়। একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে আগাম জাতের ধান কেটে ঐ জমিতে আলু, ভূট্টা, গমসহ শীতকালীন সবজি আবাদ করে অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। আমন ধার রোপনের পর থেকে শস্য কর্তন না হওয়া পর্যন্ত কৃষি শ্রমিকদের হাতে কোন কাজ থাকত না। বর্তমানে কৃষি শ্রমিকেরা ভূট্টা, আলু ও গম সহ বিভিন্ন জমিতে কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। পৌরশহরের ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী ও বীরগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংলগ্ন এলাকায় খড় বিক্রেতা মোঃ খোরশেদ আলম জানান, খড় বেশি কেনেন যাঁদের গরুর খামার আছে। কিংবা ব্যক্তিগতভাবে যাঁরা গরু পালন করেন তাঁদের। ‘গরু পালন করতে শীত মৌসুমে ঘাসের সংকট হয়। তাই যে গরু থেকে দুধ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোকে খড় ও ভুষি এবং তেলের খৈল মিশিয়ে খাওয়ালে দুধ বেশি পাওয়া যায়।’ তিনি বলেন, ‘আমার মতো অনেক খামারিই খড় এই আমন মৌসুমে কিনে রাখেন। লাখ টাকার খড় কিনে সারা বছর গরুকে খাওয়াতে হয়। ধানের থেকে খড়ের দাম বেশি হয় অনেক সময়। তিনি আরও জানান, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এখানে খড়ের ব্যবসা করছি। বীরগঞ্জ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাক বোঝাই করে যাচ্ছে খড়। নতুন ধন উঠার পর খড়ে দাম কম থাকে। প্রতি পণ ২৯ জাতের ধানের খড় বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৪২ টাকা দরে। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার খড় বিক্রি করতে পরে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন তিনি।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল ২৯ হাজার ৫শত ৭৫ হেক্টর। বর্তমানে তা অতিক্রম করে ২৯ হাজার ৫৭৮
হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। রোববার উপজেলার হাটখোলায় প্রতি মন প্রকারভেদে ধান বিক্রি হয়েছে ১২৫০ থেকে ১৩৮০ টাকা পর্যন্ত।
উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের শীতলাই পান্থাপাড়া গ্রামের কৃষক খোরশেদ জানান, তিনি এবার আমন মৌসুমে বিভিন্ন জাতের আগাম ধান আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। তিনি আরও জানান, আগাম জাতের ধান কাঁটার পর সেই জমিতে ভূট্টা ও আলু চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলায় আগাম জাতের বিনা ধান ১৭, বিনা ধান-৭, ব্রি-ধান -৮৭ ও ৭৫ এবং হাইব্রিড জাতের কিছু ধান ইতোমধ্যে কাটামাড়াই কর্তন শেষ করেছে কৃষকরা। তিনি আরো বলেন, এবার আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকেরা লাভের মুখ দেখছেন। তিনি আরও বলেন, আমন ধান উৎপাদনের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা করা হয়েছে এবং কৃষি বিভাগের কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সবসময় পরামর্শ দিয়ে নিরলস ভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে।