প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
আজ ৮ ডিসেম্বর ভালুকা মুক্ত দিবস। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে মেজর আফসার উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ভালুকা শত্রু মুক্ত হয়।
জানা যায়, বৃটিশ সেনাবাহিনীর (অবঃ) সুবেদার আফসার উদ্দীন আহমেদ ৭১এর ১৭ এপ্রিল ১টি মাত্র রাইফেল ও ৮জন সদস্য নিয়ে মুক্তিবাহিনীর একটি গেরিলা ইউনিট গঠন করেন। পরে ভালুকা থানা দখল করে ১৫/১৬টি রাইফেল ও প্রচুর গোলাবারুদ সংগ্রহ করেন। পরে তিনি প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সদস্য’র এক বিশাল বাহিনী গঠন করেন।এফ জে ১১নং সেক্টরের ময়মনসিংহ সদর দক্ষিণ ও ঢাকা সদর উত্তর সাব-সেক্টর অধিনায়ক মেজর আফসার ব্যাটেলিয়ন নামে পরিচিতি লাভ করে। পরে আফসার ব্যাটেলিয়ন হয়ে উঠে ‘আফসার বাহিনী’। যুদ্ধকালী ‘জাগ্রত বাংলা’ নামে আফসার বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি মুখপত্র প্রকাশ করা হতো।
যুদ্ধকালীন সময় আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য ডা. রমজান আলী তরফদারের তত্বাবধানে ৫জন ডাক্তার ১০জন সহকারী চিকিৎসক ও ৪জন নার্সের সমন্বয়ে আফসার ব্যাটেলিয়ান হাসপাতাল একটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল পরিচালিত হয়। আফসার বাহিনী কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধ করেছে, এরমধ্যে আমলীতলাযুদ্ধ ও বল্লাযুদ্ধ। তবে উল্ল্যেখযোগ্য যুদ্ধ হলো, ভাওয়লিয়াবাজু যুদ্ধ। সেখানে প্রায় ৩৬ঘণ্টা একটানা যুদ্ধ শেষে আফসার বাহিনী বিজয়ী হয়।ঐতিহাসিক ওই যুদ্ধের খবর তৎকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে ফলাও করে সম্প্রচার করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে আফসার উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও আফছার বাহিনীর তরুন যোদ্ধা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আ. মান্নান সহ ৪৭ জন বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
উল্লেক ত্রিশাল, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, শ্রীপুর ও সখীপুরের কিছু অংশ ছিল আফসার বাহিনীর সমরক্ষেত্র। ভালুকা মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।