প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
গেল বছরের মাঝামাঝি পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে নিয়ে ‘তরী’ সিনেমার ঘোষণা দেন নির্মাতা রাশিদ পলাশ। নানা জটিলতায় তাকে নিয়ে সিনেমার শুটিং করা সম্ভব হয়নি। মাঝে ঋতুপর্ণাকে বাদ দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন নির্মাতা। অবশেষে তাই হলো।কয়েক মাসের ব্যবধানে পাল্টে গেছে সিদ্ধান্ত। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে ‘তরী’ সিনেমার পরিচালক জানালেন, ঋতুপর্ণা নন, ওই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে। ভিসাপ্রক্রিয়া শেষে আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় আসবেন। এরপর শুটিংয়ে অংশ নেবেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। যাদের একজন সংসদ সদস্য ও অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্রের দাবি, সরকার পতনের পর ফেরদৌস নাকি তার কলকাতার বান্ধবী ঋতুপর্ণার বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। আর সে কারণেই বিতর্কের সৃষ্টি না করতে ‘তরী’ সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাকে।
এদিকে ঋতুপর্ণা বাদ দিয়ে সে জায়গায় শ্রীলেখা মিত্রকে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী। যেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়, বর্তমানে যা পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যে, এমন সময়ে ওপার বাংলায় কাজ করতে যেতে ভয় হচ্ছে কি না? অভিনেত্রীর উত্তর, ‘যেখানে পশ্চিমবাংলায় এতকিছু ঘটছে, সেখানে তো বেঁচে আছি, কাজ করছি। তাহলে ওদিকে কেন নয়?’
ঋতুপর্ণার সঙ্গে সেই আরজি কাণ্ডের সময় থেকে শ্রীলেখার বিবাদ। ঋতুর শঙ্খ বাজানো থেকে শ্যামবাজারের বুকে প্রতিবাদে যাওয়ার ঘটনা সবকিছুতেই শ্রীলেখা মিত্র আওয়াজ তুলেছিলেন। তাহলে সিনেমার এই বিষয়টা কিভাবে দেখছেন?অভিনেত্রী বললেন, ‘আমি জানতাম না ঋতুপর্ণার বিষয়টা। ওরা আমার সঙ্গে সিনেমার ব্যাপারে সেপ্টেম্বরের আগে যোগাযোগ করে। তখন কিছু ইস্যু হয়ে যাওয়ায়, আমার আর কাজটা করা হয়নি। পরে গল্পটা শুনে ভাল লেগেছিল। তারপর ওরা আমার সঙ্গে আলোচনা করল, কীভাবে কাজটা কি করা যায়। এভাবেই সম্পর্কটা তৈরি হলো।’ফেরদৌসের সঙ্গে বন্ধুত্ব ঋতুপর্ণার। সে কারণেই যে তিনি বাদ পড়েছেন সিনেমা থেকে, এমনটাই খবর। অভিনেত্রী জানালেন, তিনিও শুনেছেন সেই খবর।
শ্রীলেখা বললেন, ‘হ্যাঁ, তেমনই শুনলাম। সরকার পড়ে যাওয়ার পর ঋতুপর্ণার বাড়িতে নাকি ছিল ফেরদৌস। যাই হোক, ওখানে তো একটা রেভ্যুলেশন হয়েছে। ওখানকার মানুষদের চাহিদার কথা তো মাথায় রাখতেই হবে। তিনটা মেয়ের গল্প এই ছবিটা। ঐ দেশের নায়িকারা রয়েছেন। খুব ইন্টারেস্টিং একটা বিষয়।’দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে কিছু সমস্যা অব্যাহত। ভারত সরকার, ভিসা বন্ধ করেছে। সেখানে কী করে শুটিংয়ে যাবেন তিনি? অভিনেত্রীর কথায়, ‘যেটা ঘটছে বাংলাদেশে সেটা সঠিক না। কিন্তু একটা জিনিস, সংখ্যালঘুদের সবসময় লড়াই করতে হয়। আর ভিসার বিষয় আমি কিছুই জানি না। সেটা প্রযোজক জানেন।’এদিকে এই সিনেমা প্রসঙ্গে নির্মাতা রাশিদ পলাশ জানান, ঋতুপর্ণাকে বাদ দেয়া দেশের সংস্কারের অংশ। অভিনেত্রীর সঙ্গে চিত্রনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তাই অভিনেত্রীকে না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।