প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের বহনকারী গাড়িটি নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁয়ে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। এতে হামলা চালিয়ে ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, মুঠোফোন, ব্যাগসহ মালামাল কেড়ে নেওয়া হয়। এ সময় হামলাকারীদের ভেঙে ফেলা গাড়ির কাচে অন্তত দুজন আহত হয়েছেন।রোববার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দুইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই পথে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন ছাত্রনেতারা।
হামলার সময় গাড়িটিতে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব আরিফ সোহেল; সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, মাহমুদা সুলতানা, রাকিব মোহাম্মদ, মুঈনুল ইসলাম, ইব্রাহিম নীরব; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন মিতু ও ছাত্রনেতা মিশু আলী। তাদের মধ্যে রাকিব মোহাম্মদ ও মাহমুদা সুলতানা আহত হয়েছেন।ঘটনার পর গাড়িতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ফেসবুক লাইভে এসে ভিডিওসহ ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়টি প্রকাশ করেন। লাইভে তিনি হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি জানান, রাত ১টার সময় তার নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা থেকে ভাড়া করা একটি মাইক্রোবাসে চড়ে বান্দরবানের লামার উদ্দেশে রওনা দেন।রাত ২টায় তাদের গাড়িটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা সেতুর ঢালে পৌঁছালে তারা ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। এ সময় ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে তাদের গাড়ি রোধ করে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মাইক্রোবাসের বাম পাশের জানালার কাঁচ ভেঙে দেয়।
তিনি আরও জানান, ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে নগদ ১০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এদিকে সংগঠনটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গণমাধ্যমকে ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ‘সোমবার বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি স্মরণসভা ও মতবিনিময়ে অংশ নেওয়ার কথা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। ওই উদ্দেশ্যে গতকাল রাতে আট সদস্যের প্রতিনিধিদল একটি গাড়িতে করে ঢাকা ছাড়ে। রাত দুইটার দিকে গাড়িটি মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় হামলার শিকার হয়।’
এছাড়া হামলার সময় গাড়িতে থাকা রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা হামলার ভয়াবহতা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গাড়িটি যানজটের কারণে থেমে থেমে চলছিল। এরই মধ্যে চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা একদল লোক গাড়ির কাচ ভেঙে চালকের গলায় চাপাতি ধরে। হামলাকারী ব্যক্তিরা একপর্যায়ে গাড়িটির চারপাশ ঘিরে ফেলেন। তারা চাপাতিসহ অন্য অস্ত্রের আঘাতে পুরো গাড়িটির কাচ ভেঙে আমাদের মুঠোফোন, টাকা, ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি কেড়ে নেন। তারা আরিফ সোহেল ভাইকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ির বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হলে হামলাকারী ব্যক্তিরা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান।’হামলার ঘটনার পর ছাত্রনেতাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ভোর পাঁচটার দিকে ছাত্রনেতাদের একটি দল বান্দরবান ও আরেকটি দল ঢাকার উদ্দেশে সোনারগাঁ ছাড়ে।সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল বারী বলেন, ‘গাড়িটি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছিল। পাশেই আমাদের একটি টহল দল ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের টহল দলটি এগিয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে আমরা ছিনতাইকারীদের ধরতে তৎপরতা শুরু করেছি।’