লেখকঃজহিরুল ইসলাম ইসহাকী
দেশপ্রেম শুধুমাত্র হৃদয়ের অনুভূতি নয়, এটি এক গভীর ঈমানী দায়বদ্ধতা। যে মানুষ নিজের দেশকে ভালোবাসে না, তার ভেতর বিশ্বাসের সৌরভ থাকে না। এ দেশ, এ মাটি, এ আকাশ—এসব আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া। এই মাটি শুধু মাটি নয়; এটি আমাদের অস্তিত্বের শেকড়, আমাদের আশা, আমাদের ইতিহাস। আমাদের দেহের প্রতিটি রক্তকণা, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে এই মাটির গন্ধ লুকিয়ে আছে।
তবু, যুগে যুগে এ দেশকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে বহিরাগত শক্তি। কখনো অস্ত্রের জোরে, কখনো মিথ্যার বেসাতি করে, কখনো অর্থ আর প্রলোভনের মোড়কে। কিন্তু এই মাটির সন্তানরা কখনো মাথা নত করেনি। এই বাংলার বুকেই রচিত হয়েছে স্বাধীনতার অমর কাব্য। ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া, মুক্তির জন্য যুদ্ধ করা—সবই আমাদের ইতিহাস।
আমাদের দেশ মায়ের মতো। মায়ের মাটি কখনো শত্রুর হাতে তুলে দেওয়া যায় না। যদি প্রয়োজন হয়, প্রিয়তম সবকিছু বিসর্জন দেব, কিন্তু মায়ের কোলে আঁচড় পড়তে দেব না।
যে মাটি জন্ম দেয়, যে আকাশ ছায়া দেয়, সেই মাটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে আমরা অকৃতজ্ঞ হয়ে যাব। এই দেশ আমাদের, এ দেশের নদী আমাদের। এখানকার প্রতিটি বৃক্ষ, প্রতিটি পাখি, প্রতিটি দানায় আমাদের অধিকার। যারা এই মাটিকে ভালোবাসে না, তারা নিজেদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে।
আজকের পৃথিবী অন্যায় আর অত্যাচারের ভরা। শকুনেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে মাটির টুকরো দখল করার জন্য। তারা জানে না, বাঙালির রক্তে আছে প্রতিরোধের সুর। আমরা কখনো পরাজিত হইনি, হবও না। যদি কোনো শকুন এই মাটির দিকে হাত বাড়ায়, তবে তার হাত পুড়িয়ে ছাই করে দেব। প্রয়োজন হলে জীবন উৎসর্গ করব, কিন্তু এই মাটি দেব না।
আমাদের এ ঈমানি দায়িত্ব, দেশের মাটি রক্ষা করা। যারা দেশকে ভালোবাসে, তারা প্রকৃত মুমিন। মাটি রক্ষার লড়াই শুধু লড়াই নয়, এটি একটি ইবাদত। এই ইবাদতে আমরা সবাই অংশ নিতে প্রস্তুত।
তাই আসুন, একসঙ্গে শপথ করি—এই মাটির প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করব। শত্রুর মুখে চুনকালি মেখে দেব। যদি প্রয়োজন হয়, নিজের রক্ত দিয়ে আবারও লিখব স্বাধীনতার নতুন ইতিহাস। কিন্তু কোনো শকুনকে দেব না এক ইঞ্চি মাটি।