প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
ইউক্রেনকে কোনোভাবেই ন্যাটোর সদস্য করা যাবে না। আমেরিকার কাছে রাশিয়া এমনই শর্ত দিয়েছে বলে জানা গেছে। রাশিয়ার একটি গণমাধ্যমে দেশের সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, আমেরিকার কাছে দুইটি বিষয় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।মুখপাত্র বলেন, এক, ইউক্রেনকে কোনোভাবেই ন্যাটোর অংশ করা যাবে না এবং দুই, যে কোনো শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। রাশিয়ার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো জানিয়েছেন, ‘আমরা আশা করব, এই শান্তিচুক্তিতে নিরাপত্তার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে। সেজন্যই ইউক্রেনকে এই আলোচনায় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনে ন্যাটো কোনোরকম কাজ করতে পারবে না। এমনকি, ন্যাটোর সেনাও ইউক্রেনে থাকতে পারবে না।
মেদভেদেভের বক্তব্য
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তারা একটি বিষয়ে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন চায় ইউক্রেনে ন্যাটোর শান্তি সেনা মোতায়েন করতে। কিন্তু রাশিয়া কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স দুই দেশই জানিয়েছিল, তারা ইউক্রেনে শান্তিসেনা মোতায়েন করতে চায়। এটাই হবে শান্তি প্রতিষ্ঠার গ্যারান্টি। কিন্তু রাশিয়ার আপত্তি ঠিক এই জায়গাতেই। বস্তুত, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধানের এই পরিকল্পনাকে ‘বোকা’ বলে সম্বোধন করেছেন তিনি। তার কথায়, ন্যাটোর শান্তি সেনা যদি ইউক্রেনে মোতায়েন করা হয়, তাহলে রাশিয়া ধরে নেবে এবার তাদের যুদ্ধ ন্যাটোর সঙ্গে।
ইউক্রেন কি জমি ছেড়ে দেবে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়ালটজ জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে দুটি ত্যাগ স্বীকার করতে হতে পারে। রাশিয়া তাদের যে জমি দখল করেছে, তা ছেড়ে দিতে হতে পারে এবং ন্যাটোয় যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হতে পারে। এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে ওয়ালটজ জানিয়েছেন, ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়টি ইউক্রেনকে সম্ভবত পুরোপুরি ভুলে যেতে হবে। কারণ, ইউক্রেন ন্যাটোয় যোগ দিলে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি সম্ভব নয়।
এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চল অধিগ্রহণ করেছে। অর্থাত্, দনেত্স্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চল এখন তাদের দখলে। ঝাপরজ্ঝিয়া এবং খেরসনেও রাশিয়ার সেনা আছে। এই অঞ্চলের বদলে শান্তিচুক্তিতে যেতে রাজি মস্কো। অর্থাত্, ইউক্রেনকে ঐ জমি ছেড়ে দিতে হবে। ঠিক এভাবেই একসময় ক্রিমিয়াকে ছেড়ে দিতে হয়েছিল ইউক্রেনকে। সৌদি আরবে আমেরিকার সঙ্গে ইউক্রেনের যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে জমি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টিতে রাজি হয়নি কিয়েভ। অন্যদিকে, আমেরিকার আনা ৩০ দিনের সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েও পুতিন বেশ কিছু শর্তের কথা বলেছেন। —ডয়চেভেলে