পুলিশ বলছে, শিশু ধর্ষণের ঘটনার পর আলম ও খলিল নামে স্থানীয় প্রভাবশালী দুই ব্যক্তি অভিযুক্ত কিশোরের পরিবারের ওপর চড়াও হয়। বিকালে এ ঘটনার সমাধান বা বিচারের কথা বলে কিশোরকে আটকে রাখা হয়। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে খবর পেয়ে কিশোরকে আটক করে পুলিশ। তাকে নিয়ে থানার আসার পথে খিলক্ষেত এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে।আটক কিশোরকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি ও পুলিশের ওপর হামলা ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়ে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ধর্ষণের অভিযোগে আটক কিশোরকে নিয়ে থানায় ফেরার সময় খিলক্ষেত বাজারে (মান্নান প্লাজা সংলগ্ন চৌরাস্তা মোড়) আগে থেকে ওত পেতে থাকা দুই-তিন হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি আটকে দেয়। তারা পুলিশের টহল গাড়ি ভাঙচুর করে এবং আটক কিশোরকে ছিনিয়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি পিটুনি দেয়। সৃষ্ট মব থামাতে গেলে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ সদস্যদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ মারধর করে। এতে থানার ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত) এবং চার জন এসআই ও দুই জন কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য গিয়ে অভিযুক্ত কিশোর ও পুলিশ সদস্যদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অভিযুক্ত কিশোরকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ বলছে, মব সৃষ্টি করে আটক কিশোরকে গণপিটুনি ও পুলিশের ওপর হামলা ঘটনায় রাতে ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের শনাক্ত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতা নিয়ে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এই বিশৃঙ্খলার নেপথ্যে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়ার অভিযোগও তদন্ত করা হচ্ছে।খিলখেত থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি মামলার বাদী হয়েছেন ভিকটিমের বাবা। ওই মামলায় কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কিশোরকে মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন খিলক্ষেত থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন। মামলায় পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে বৃহস্পতিবার রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।