শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
প্রশ্নে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি, বাতিল হলো পরীক্ষা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফের চালু করলো যুক্তরাষ্ট্র জুলাই শুধু বিপ্লবের না, হান্নান মাসউদের মতো ধান্দাবাজদের কপাল খোলার মাস : নির্ঝর এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, ভয় দেখানোর জন্য: নাহিদ ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালতে দুইজনকে দণ্ড দেওয়ায় থানায় হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত ২০ বিচারিক আদেশে জামায়াতের পুরনো নিবন্ধনই বহাল, গেজেট প্রকাশ করল ইসি। জাতীয় সমাবেশ সফল করতে বৈঠক ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান; গোলাম পরওয়ারের। বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে রাজনৈতিক ঐকমত্য : অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বরিশালে যুগান্তর ব্যুরো প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা ; বিএমএসএফের প্রতিবাদ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান: ‘কেএনএফ’-এর শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ দুইজন নিহত। শার্শা সীমান্তে ৭ কোটি টাকার স্বর্ণ ও ভারতীয় পণ্য উদ্ধার, আটক ১২ বিএনপির দফা নয়, অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান ও অ্যাকশন চাই: সারজিস আলম আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি কালীগঞ্জে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেষ্টুনীসহ বৃক্ষ রোপন ও অসহায় নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরন জলবায়ু মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুইডেন সহায়তা করছে: পরিবেশ উপদেষ্টা মাত্র দু’বছর পিছিয়েছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি : পেন্টাগন থাইল্যান্ডে আবারও ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী বদল : নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিতে প্রস্তুত রূপসায় শহীদ ইয়াসিনের করব জিয়ারত করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বীরগঞ্জে বিদায় প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিককে রাজকীয় সংবর্ধনা টেলিকম খাতে নতুন নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ

তুলসীতে পরাজিতদের তৃপ্তির ঢেকুর

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ৩৫
আপডেটঃ বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:

পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, ভুটান, গাম্বিয়াসহ ৪৩টি দেশের নাগরিকদের নানান ক্যাটাগরিতে মার্কিনি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য তালিকায় বাংলাদেশকে ফেলার আয়োজনটি চরম মার খেয়েছে। এর পরও হাল ছাড়ছে না আয়োজক মহল। সামনে কোনো না কোনো সময় চান্স আসতেও পারে বলে আশা তাদের। সেই আশায় চলছে অন্তহীন চেষ্টা। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ, তাদের ঘরবাড়ি দখল, জ্বালাও-পোড়াও, মাজারে আক্রমণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাধা, নারীদের পোশাক নিয়ে কটূক্তি কিংবা পোশাকের কারণে নারীদের হেনস্তা করার মতো কিছু ঘটনাকে রঙিন মোড়কে সামনে এনে বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থানের কাহিনি প্রচার এজেন্ডা আরো জোরদার করা হয়েছে।দেশের কয়েক জায়গায় ধর্ষণ, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ভঙ্গুর অর্থনীতিতে যারা মনে করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার দেশি-বিদেশি চাপে পড়ছে; এমনকি সামরিক অভ্যুত্থানের গুজবও ছড়ানো হয়েছে। এ রকম সময়েই সফরে আসা জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ‘টেকসই ও ন্যায়সংগত ভবিষ্যত্ গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘের ওপর নির্ভর করতে পারে।’ ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্টেও দেন জাতিসংঘ মহাসচিব। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকে গুতেরেস বলেছেন, এ সময়টা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই একটি অংশগ্রহণমূলক ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত্ নির্মাণের এই পথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও উচিত বাংলাদেশের পক্ষে তাদের প্রত্যাশিত ভূমিকাটি পালন করা।

বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষার অন্যতম বৃহত্তম অবদানকারী দেশ উল্লেখ করে গুতেরেস বিশ্বে সবচেয়ে কঠিন ও বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সফরকালে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও। তারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান, আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যত্ সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় সেনাপ্রধান বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা, প্রশিক্ষণ ও জাতিসংঘ মিশনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। জানান, ‘বাংলাদেশ শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতেও এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

এ রকম একটা নির্ভার সময়েই ভারত সফরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড। সেখানে বাংলাদেশ পরিস্থিতি, বিশেষ করে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ‘গভীর উদ্বিগ্ন’ বলে তার দেওয়া সাক্ষাত্কারে এ মহল বেশ আশাবাদী। ইউরেকা-ইউরেকা ভাবভঙ্গি। বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান বদলে গেছে—এ মর্মে তাদের প্রচারণা বেশ জোরদার। তুলসীর মূলে জল ঢালা এবং এ সংক্রান্ত চাষাবাদে যারপরনাই ব্যতিব্যস্ত তারা। ঢাকা-দিল্লি দুইখানেই অনেকটা আকস্মিক প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান। তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও হত্যা এবং দেশে ইসলামি সন্ত্রাসীদের হুমকি রয়েছে মন্তব্য করে মোটামুটি একটা ভিন্ন আবহ তৈরি করে দিয়েছেন। বাংলাদেশে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাড়া জাগানো সফর, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নিয়ে কক্সবাজারে লাখো রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার, ইউনূসের চীন সফরের সময় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আসন্ন বিশেষ বৈঠক, ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ইত্যাদি মিলিয়ে গোলমেলে অবস্থার মধ্যে তারা হালে কিছুটা পানি পেয়েছেন তুলসীর সাক্ষাত্কারটিতে।

মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা তুলসী গ্যাবার্ড ২০২৫ সালের শুরু থেকে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের ৮ম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একসময় হাওয়াই রাজ্যে সর্বকনিষ্ঠ আইনপ্রণেতা ছিলেন। ডেমোক্রেটিক পার্টিতে ছিলেন ২০০২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত। পরে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন ২০২৪ সালে। তিন দিনের ভারত সফরে এসে গ্যাবার্ড সে দেশের চ্যানেল এনডিটিভিকে ১৭ মার্চ সাক্ষাত্কার দেওয়ার পাশাপাশি বার্তা সংস্থা এএনআইকেও  সাক্ষাত্ দেন। সেখানে তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদের বিপদ বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করছে। তাত্ক্ষণিক তুলসীর এসব কথার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বাংলাদেশ। তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য কোনো প্রমাণ বা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নয় বলে বিবৃতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বিবৃতিতে ঝাঁঝালো ভাষায় বলা হয়েছে, তুলসীর বিবৃতি বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এবং সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াস। এটি একটি দেশকে অন্যায় ও ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ বরাবরই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম পালনের ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। বাংলাদেশ বিশ্বের আরো আন্যান্য দেশের মতো চরমপন্থার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতিনিয়ত যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয় রাজনৈতিক নেতা ও সুপরিচিত ব্যক্তিদের সংবেদনশীল বিষয়গুলো সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রকৃত তথ্য যাচাই করা উচিত। তাদের এমন কোনো বক্তব্য দেয়া উচিত নয়, যা ক্ষতিকর ধারণাকে শক্তিশালী করে, ভয় উসকে দেয় এবং সামপ্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়।

তুলসী গ্যাবার্ডের ভারতে অবস্থানকালেই দেশটিতে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের বর্বরতার নতুন নজির। মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মাজার অপসারণে দাবিতে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়েছে। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি হলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস আর ফাঁকা গুলি ছুড়লে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আর যানবাহনে লাগানো আগুন নেভাতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের সাতটি গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এদিকে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তোলা মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী দিল্লিতে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। কথা হয়েছে, সীমান্ত নিরাপত্তা সন্ত্রাস দমন, সাইবার নিরাপত্তা, নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সুরক্ষা অংশীদারি নিয়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ছাড়াও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল আর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশে জাতিসংঘ মহাসচিবের হাই-প্রোফাইল সফরের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের চীন সফরের প্রস্তুতিকালে শুরু হলো এ খেলা। এ অঞ্চলের অনেক কিছু নির্ভর করছে এ দুটি সফরের ওপর। চীন সফর অনেক সমীকরণ বদলে দিতে পারে বলে নানা তথ্য ও ধারণা নিয়ে কথা চাউর হয়েছে। ড. ইউনূসের গত সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে ভাইটাল অ্যাসাইনমেন্ট মনে করা হচ্ছে চীন সফরকে। অ্যারেঞ্জমেন্টও বিশাল। কেবল তাকে নেওয়ার জন্য ২৬ মার্চ চীন স্পেশাল বিমান পাঠাবে। যা চীন কেবল গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জন্যই পাঠায়। তারপর চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হবে ইউনূসকে। সেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ভাষণও রাখবেন তিনি। সরকারি তরফে বলা হচ্ছে, এই সফর বাংলাদেশের চীন-সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। এতে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতার সুযোগ তৈরি হবে। হিসাব বা সমীকরণ আরো আছে।

নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, মার্কিন, চীন খুব প্রাসঙ্গিক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যও। গুতেরেসের বাংলাদেশ আর ইউনূসের চীন সফর নিয়মতান্ত্রিক স্বাভাবিক সফর, নাকি পেছনে নানা কূটনীতি—এ নিয়ে কূটনৈতিক মহলে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস যেন চীন সফরেই না যান, সেই ছক ও ঘুঁটি চলছে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে গ্রুপিং, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারের সঙ্গে  সরকারপ্রধান ইউনূসের বিরোধ ইত্যাদি গুজব ছড়ানোর পেছনে রয়েছে নানা হাতের কারসাজি। কারণ, তার চীন সফর সফল হলে অপূরণীয় সর্বনাশের শঙ্কায় ভুগছে দেশি-বিদেশি কয়েকটি শক্তি। অন্যদিকে, আগ্রহী কূটনৈতিক-রাজনৈতিক মহলে তুলসী ও তার বক্তব্য নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণসহ নতুন করে নানা আলোচনা। সেখানে নানা তথ্যের সঙ্গে হালকা-মাঝারি-গম্ভীর সব ধরনের কথাই রয়েছে। এ দায়িত্ব গ্রহণের বহু আগে থেকেই আলোচিত মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী। ইসকনভক্ত তুলসীর নিয়োগ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি বড় চমক।

ভারত সফরে এসে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরেক চমক যোগ করেছেন মাত্র। গেল ছয়-সাত মাস বা ১৫-১৬ বছরে বাংলাদেশে যা ঘটেছে—তার তথ্য যুক্তরাষ্ট্র  তো বটেই, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের মতো করেই সংগ্রহ করেছে। তাই, তুলসীর বক্তব্য নিয়ে বেশি মশগুল হতে নারাজ অনেকে। কারণ, বাইডেন বা প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশ একটি মডারেট মুসলিম দেশ। মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে তুলসী গ্যাবার্ডের তা অজানা থাকার কথা নয়। এছাড়া, তিনি যেখানে বসে বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড নিয়ে তার শঙ্কার কথা বলেছেন, সেখানেও হিন্দু ধর্মভিত্তিক উগ্রতা আছে।

ভারতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকদের মধ্যে বিষয়টি ভিন্নভাবেও আলোচিত। বিষয়টিকে হালকাচ্ছলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের তুলসী গ্যাবার্ড আর পশ্চিমবঙ্গের শুভেন্দু অধিকারীকে এক করে ফেলছেন।  শুভেন্দু তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গেছেন, আর তুলসী ডেমোক্রেটিক থেকে রিপাবলিকে গেছেন এক বছরও হয়নি। শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীও দল বদল করেছিলেন, আবার তুলসীর বাবা মাইক গ্যাভার্ডও দল বদলে আলোচিত ছিলেন। দুজনের এ অদ্ভুত মিল নিয়ে কথার অনেক খই ফুটছে। হালকাচ্ছলে না নিয়ে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরো সতর্কতা ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের বিষয় রয়েছে। ঢাকাস্থ ফ্রান্স দূতাবাস এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবাদটি শেয়ার করেছে। দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে ভাবনার সঙ্গে সতর্কতাও রয়েছে। ৫ আগস্ট থেকে আধিপত্যবাদী শক্তির সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র নস্যাত্ করার চেষ্টায় বাংলাদেশের মানুষ আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য শক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোও যূথবদ্ধ।

লেখক :সাংবাদিক-কলামিস্ট  


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com