প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্কঃ
বাংলাদেশের ১৬ লাখ কোটি টাকার ব্যাংক আমানতের মধ্যেও সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা মন্দা ঋণ হিসেবে তালিকাভুক্ত, তারপরেও বর্তমানে বড় ধরনের আর্থিক খাতে দুর্নীতি হচ্ছে না—এটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং সকল অর্থসম্পদ একটি বিশেষ শ্রেণীর কাছে স্বাধীনতার পর থেকে জিম্মি, কুক্ষিগত। বর্তমানে দেশের মোট ১৪ কোটি ৬০ লাখ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৯ কোটির বেশি অ্যাকাউন্টে মাত্র ৫ হাজার টাকার নিচে সঞ্চয় রয়েছে—এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, যা প্রমাণ করে যে আমরা এখনও অধিকাংশ জনগোষ্ঠীকে মূলধারার অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারিনি। বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল বাজার, কিন্তু অধিকাংশ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নেই। বর্তমানে ১৪-১৬% সুদের হার বিনিয়োগকে সংকুচিত করে তুলছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা—কিন্তু গত ৩ বছরে টাকার মান ডলারের বিপরীতে প্রায় ৪০% হ্রাস পেয়েছে। যদিও বর্তমানে আইনের শাসনে কিছুটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে, তারপরও সেটি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট নয়। মুদ্রানীতির স্থিতিশীলতা, সম্পত্তির নিরাপত্তা ও আইনের শাসন ছাড়া অর্থনৈতিক উত্তরণ অসম্ভব। তবে এখনো সময় আছে—যদি আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হই, সিন্ডিকেট ভাঙি, এবং প্রপার্টি রাইটস ও রুল অব ল’ দৃঢ়ভাবে প্রয়োগ করি, তবে এই তরুণ ও পরিশ্রমী জাতি তার ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে কাজে লাগিয়ে এক নতুন অর্থনৈতিক বিস্ময় তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশের সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী শক্তি ও উৎকর্ষতা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা রাখে—শুধু প্রয়োজন একটি ন্যায্য, স্থিতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্ব, যারা সৎ থাকবে, সাহস দেখাবে, এবং দেশের জন্য একটি সঠিক, টেকসই পরিবেশ গড়ে তুলতে পারবে।