প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
প্রেমের টানে এক তরুণীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে আটক হয়েছেন বগুড়ার সান্তাহারের খাদ্য পরিদর্শক ইউসুফ আলী (৫০)। সেখানে তাকে দুই দিন ধরে আটকে রেখে দরকষাকষির ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ইউসুফ আলীকে শোকজ করে সান্তাহার থেকে পাবনায় বদলী করা হয়।মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ২টায় এক কিশোরীকে নিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে খাদ্য কর্মকর্তা ইউসুফ আলীর যাওয়ার পর থেকেই ঘটনা প্রবাহ চলতে থাকে।
জানা গেছে, আটক ইউসুফ আলী বগুড়ার সান্তাহারের কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগার (সিএসডি) খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার ঘোরশাল গ্রামের গোলাম রব্বানী আকন্দের ছেলে। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার সামন্তাহার গ্রামের এক নারীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় ঘটে ইউসুফ আলীর। দীর্ঘ চার বছর ধরে চলে তাদের সেই সম্পর্ক। বাড়ি ও অফিসে যাতায়াত ছিল দুজনেরই।
মঙ্গলবার দুপুরে ইউসুফ আলী ওই নারীর বাড়িতে যাওয়ার পর বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করলেও বিয়েতে রাজি হননি তিনি। তখন প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তাকে আটকে রাখেন ওই নারী। ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
তখন উৎসুক জনতা জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের থানায় নিতে চাইলে স্থানীয়রা বাধা দেন। পরের দিন বিষয়টি নিয়ে আবারও সমাধানের চেষ্টা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। একপর্যায়ে ১১ লাখ টাকার বিনিময়ে সমাধান করতে চাইলে আপস করেননি নারী। স্থানীয় মোড়লরা আবারও পুলিশ ডাকেন। পরে বুধবার রাত ১০টায় খাদ্য কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।ভুক্তভোগী ওই তরুণী বলেন, ইউসুফের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক৷ তিনি আমার বাড়িতে বিয়ে করতে আসেন৷ দেনমোহর নিয়ে দরকষাকষি হলে প্রতিবেশী প্লাবন ভাইয়ের শরণাপন্ন হই৷ খবর পেয়ে সন্ধ্যায় স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান উপস্থিত হন৷ তিনি বিয়ের ব্যবস্থা না করে টাকার প্রলোভন দেখান।
পরের দিন একপর্যায়ে প্লাবনের মাধ্যমে ইউসুফের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১১ লাখ টাকা তুলে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন৷ কোনো সমাধান না হওয়ায় টানা দুদিন আমার বাড়িতেই ইউসুফ অবস্থান করেন। গতরাতে পুলিশ এসে ইউসুফকে নিয়ে গেছে। তার সঙ্গে টাকা ছিল, তারা টাকাপয়সা খেয়ে ইউসুফকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। ইউসুফের সঙ্গে আমাকে থানায় নেওয়া হয়নি৷এ ব্যাপারে ইউসুফ আলী জানান, পরিচয়ের সূত্র ধরেই ওই নারী বিভিন্ন মাধ্যমে সমস্যা সৃষ্টি করতে থাকে। পরে আমি তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করতে ক্ষেতলাল গিয়েছিলাম। সেখানে বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করে। বিভিন্নভাবে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে আমার।ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর দীপেন্দ্র নাথ সিংহ জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে সান্তাহারের খাদ্য বিভাগের সিএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে অন্য কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ওই তরুণী অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।