শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১০:২০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফের চালু করলো যুক্তরাষ্ট্র জুলাই শুধু বিপ্লবের না, হান্নান মাসউদের মতো ধান্দাবাজদের কপাল খোলার মাস : নির্ঝর এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, ভয় দেখানোর জন্য: নাহিদ ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালতে দুইজনকে দণ্ড দেওয়ায় থানায় হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত ২০ বিচারিক আদেশে জামায়াতের পুরনো নিবন্ধনই বহাল, গেজেট প্রকাশ করল ইসি। জাতীয় সমাবেশ সফল করতে বৈঠক ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান; গোলাম পরওয়ারের। বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে রাজনৈতিক ঐকমত্য : অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বরিশালে যুগান্তর ব্যুরো প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা ; বিএমএসএফের প্রতিবাদ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান: ‘কেএনএফ’-এর শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ দুইজন নিহত। শার্শা সীমান্তে ৭ কোটি টাকার স্বর্ণ ও ভারতীয় পণ্য উদ্ধার, আটক ১২ বিএনপির দফা নয়, অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান ও অ্যাকশন চাই: সারজিস আলম আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি কালীগঞ্জে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেষ্টুনীসহ বৃক্ষ রোপন ও অসহায় নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরন জলবায়ু মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুইডেন সহায়তা করছে: পরিবেশ উপদেষ্টা মাত্র দু’বছর পিছিয়েছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি : পেন্টাগন থাইল্যান্ডে আবারও ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী বদল : নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিতে প্রস্তুত রূপসায় শহীদ ইয়াসিনের করব জিয়ারত করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বীরগঞ্জে বিদায় প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিককে রাজকীয় সংবর্ধনা টেলিকম খাতে নতুন নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ রূপসায় পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক অভিযান চালালেও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএর বিভিন্ন কার্যালয়ে ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ হয়নি।

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ৯৫
আপডেটঃ রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্কঃ

সংস্থায় ঘুষ বাণিজ্য বহু আগে থেকেই চলছে। অবস্থা এমন যে ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি সাবেক সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেবাগ্রহীতাদের চাপে নিজেই দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে তুলে ধরতে বাধ্য হয়েছিলেন। ওই দিন তিনি বিআরটিএ মিরপুর কার্যালয়ে গিয়ে সেই কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনরত উপপরিচালক মো. মাসুদ আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন। ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সেবাদানের দুরবস্থা তুলে ধরে বলেছিলেন : মাসুদ তুমি ভালো হয়ে যাও। তারপর অবশ্য সেই মাসুদের পদোন্নতি হয়েছিল। এখন সেই মাসুদ বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের ১৩টি ও সিলেট বিভাগের চারটি মিলে মোট ১৭টি কার্যালয়ের মূল কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন। তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থার এই কার্যালয়গুলোয় চলছে অবাধ ঘুষ বাণিজ্য। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মাসুদ এখনো ভালো হননি। অন্যদিকে রাজশাহী বিআরটিএতে চক্র গড়ে আবেদন আটকে ঘুষ নিতেন সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ।
তাঁকে সুনামগঞ্জে বদলি করার পর থেকে কাজে মন বসছে না।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে বিআরটিএ মিরপুর কার্যালয়ে উপপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) ছিলেন মাসুদ। ওই বছরের ১৮ জানুয়ারি তাঁকে নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তোলে। ঝড় ওঠানো সেই মাসুদ বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে কী করছেন? সেবাগ্রহীতারা কি নির্বিঘ্নে সেবা নিতে পারছেন? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সেখানে অবাধেই বিভিন্ন চক্র ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস, নিবন্ধনসহ বিভিন্ন খাতে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন ঘুষ না দিলে।

মাসুদকে লক্ষ করে ওবায়দুল কাদেরের ছোড়া মন্তব্য এখনো অনেকের মুখে মুখে। বিষয়টি নিয়ে এ পর্যন্ত গণমাধ্যমে মুখ খোলেননি মাসুদ। প্রশ্ন উঠেছে তিনি কি আগের মতোই আছেন, নাকি ভালো হয়ে গেছেন? তাঁর সহকর্মীসহ অনেকে বলেছেন, সেই মাসুদ অতীতের ‘বদনাম’ বদলের চেষ্টা করছেন। তবে এখনো পর্যন্ত তিনি ভালো হননি। কারণ যেখানে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন এবং যেসব কার্যালয়ের মূল দায়িত্বে আছেন, সেগুলোয় দুর্নীতি-অনিয়ম চলছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে সেবাগ্রহীতাদের সেবা নিতে ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ প্রতিরোধে মাসুদ নানা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে ঘুষ বন্ধ হতে দেখা যায়নি। গত ৭ মে থেকে দফায় দফায় বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে গিয়ে পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মো. মাসুদ আলমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ওবায়দুল কাদেরের ওই মন্তব্য নিয়ে মাসুদ এখনো সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে নারাজ। তবে তিনি এক পর্যায়ে কালের কণ্ঠকে বলেছেন, ‘ওই বিষয়টি (ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য) নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। এখন কিছু বলব না। সময় হোক, পরে বলব।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তা জানান, ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের কারণে মাসুদের পরিবার সামাজিকভাবে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিল। তাঁর এক সন্তান প্রায় দুই বছর স্কুলে যেতে পারেনি। মাসুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। গত বছরের ২৫ মার্চ তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে পরিচালক পদে যোগ দেন। মাসুদ কালের কণ্ঠের কাছে দাবি করেছেন, তিনি চট্টগ্রাম বিআরটিএতে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করছেন। তবে মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি দেখে বোঝা গেছে, সেখানে শৃঙ্খলা নেই, ঘুষ বাণিজ্যও চলছে। মাসুদ দাবি করছেন, প্রতিটি কার্যদিবসে একাধিকবার ফিটনেস, নিবন্ধন, মালিকানা বদলসহ বিভিন্ন শাখায় গিয়ে সরেজমিনে তদারকি করছেন। অভিযোগ পেলে দালালদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তবে সেবাগ্রহীতা ট্রাকচালক মোহাম্মদ শফিক জানান, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে ওয়াহিদ নামের এক দালালকে অতিরিক্ত চার হাজার টাকা দিয়েছিলেন। দেড় মাস আগে পরীক্ষা দিয়েছেন। লাইসেন্স কবে পাবেন তা কেউ বলতে পারছে না। অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ নাজিম বলেন, হালকা শ্রেণির ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে দালালের কাছে অতিরিক্ত ছয় হাজার টাকা দিতে হয়। ঘুষ দেওয়ার দুই মাস পরও তিনি লাইসেন্স পাননি। অটোরিকশাচালক খায়রুল আমীন বলেন, বোয়ালখালীর ইমন নামের এক দালালের মাধ্যমে ফিটনেস বাবদ সাড়ে ১১ হাজার টাকা (আয়কর ছাড়া) খরচ হয়। এই টাকা দেওয়ার পরও ঘুরতে হচ্ছে।
চট্টগ্রামে আসার আগে মাসুদ ২০২২ সালের ২১ জুন খুলনা বিআরটিএর বিভাগীয় পরিচালকের দায়িত্ব পান। সেখানেও তাঁর দায়িত্বকালীন খুলনা বিআরটিএতে ঘুষ বাণিজ্য অব্যাহত ছিল। তারপর চট্টগ্রামে বিভাগীয় কার্যালয়ে বিভাগীয় পরিচালকের দায়িত্ব নিয়েই চট্টগ্রাম বিআরটিএতে গ্রাহকের ভোগান্তি শূন্য কোঠায় নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত ৭ মে দুদক বিআরটিএর ৩৫ কার্যালয়ে অভিযান চালায়। মাসুদের নিয়ন্ত্রণাধীন বিআরটিএ সিলেট কার্যালয়েও অভিযান চলে। অভিযানে কার্যালয়ের মোটরযান পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেনের কক্ষের আলমারি থেকে হাবিবা এন্টারপ্রাইজের স্বাক্ষরযুক্ত ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেকের পাতা, একাধিক মোবাইল ফোন ও হকিস্টিক উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ না দিলে হকিস্টিক দিয়ে নির্যাতন করতেন সেখানকার মোটরযান পরিদর্শক।

রশিদের পকেট ভারী : ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল বিআরটিএ রাজশাহী কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক পদে যোগ দেন আব্দুর রশিদ। যোগদানের পর সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহাদত আলী শাহুর নেতৃত্বে চক্র গড়ে তোলেন। এই চক্র মূলত ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন আটকে রেখে ঘুষ নিত। ঘুষ না দিলে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর ফাইল আটকে রাখতেন রশিদ। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে অফিসের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরোধও তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রাজশাহী থেকে সুনামগঞ্জ বিআরটিএতে বদলি করা হলেও রাজশাহী ছাড়তে চাননি রশিদ। পরে জোর করে তাঁকে সুনামগঞ্জ পাঠানো হয়। রশিদচক্র এখনো আছে রাজশাহীতে। কয়েক দিন আগে বিআরটিএ রাজশাহী কার্যালয়ে সরেজমিন অনুসন্ধানে এ তথ্যই পাওয়া গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com