প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
পটুয়াখালী জেলার বাউফল-ঢাকা নৌরুটের নদীর বাঁকে বাঁকে ও প্রবেশ মুখে জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। ফলে লঞ্চ, কার্গোসহ নৌযানগুলো ভাটার সময় প্রায়ই চরে আটকে যায়। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল নৌ-যানগুলো। এতে মালবাহী কার্গোতে পরিবহন করা মালামাল নিয়ে উপজেলায় সময়মতো না পৌছার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, উপজেলার নদীবন্দর কালাইয়া, বগা, নুরাইনপুর, ধুলিয়া থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি ডাবল ডেকার লঞ্চ ঢাকা রুটে, প্রায় ১৮টি সিঙ্গেল ডেকার লঞ্চ অভ্যন্তরীন রুটে ও শতাধিক মালবাহী কার্গো জাহাজ ঢাকা রুটে ছাড়াও স্থানীয় রুটে অসংখ্য ট্রলার চলাচল করে।
কালাইয়া বন্দর আড়তদার সমিতির সভাপতি সহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, এই অঞ্চলের যাত্রীরা ও ব্যবসায়ীরা অনেক বছর ধরে নৌ-রুটে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার কারণে নৌ-রুট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আনা ও নেওয়ার ক্ষেত্রে লঞ্চ কার্গো ব্যবহার করতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচরের কারণে ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে নদী পথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আর এ কারণে সড়ক পথে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়ে যায়। এ রুটের একাধিক লঞ্চের সুকানি (লঞ্চ চালক) জানান, বগার লোহালিয়া নদীর চরগরবদী, ঝিলনা কারখানা, বগা লঞ্চঘাটের উত্তর পাশে প্রায় এক কিলোমিটার, বাহেচরচর, নাজিরপুর, ধুলিয়া, নিমদি, কালাইয়া লঞ্চঘাট প্রবেশ মুখে অসংখ্য ডুবোচর জেগে উঠেছে। এ সব ডুবোচরের কারণে চ্যানেলগুলো ছোট হয়ে গেছে। প্রায়ই ওই ডুবো চরে নৌযান আটকে পরে। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জোঁয়ারের জন্য অপেক্ষা করে নৌযান ছাড়তে হয়। উপজেলার কালাইয়া লঞ্চঘাট অপেক্ষামান এম ভি ধুলিয়া লঞ্চের যাত্রী শাহজাহান মিয়া বলেন, এই রুটের অসংখ্য ডুবো চরের কারণে প্রায়ই লঞ্চ নদীতে আটকে থাকে। যাত্রীরা জোয়ারের জন্য অপেক্ষা না করে লঞ্চের ভাড়া না দিয়েই জেলেদের কিংবা অন্যান্য ট্রলারের মাধ্যমে নেমে যায়। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় লঞ্চ কর্তপক্ষের।
উপজেলার পরিবশেক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সিদ্দিকি জানান, এক সময়ে নুরাইনপুরের আলোকী নদী দিয়ে সহজেই কালিশুরী হয়ে ধুলিয়া চ্যানেল দিয়ে ঢাকা, কাঠপট্রি, চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি থেকে মালামাল ক্রয় করে নৌযান দিয়ে দ্রুত চলাচল করা যেত। কিন্তু সেই উত্তাল আলোকী নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। তাই নৌযান নিয়ে এখন প্রায় ৩০ কিলোমিটার নৌপথ অতিরিক্ত ঘুরে আসতে হয়। এতে করে পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় উপজেলার নৌপথের গুরুত্ব বিবেচনা করে অবিলম্বে পরিকল্পিত খননের মাধ্যমে নদীতে নৌ চলাচলের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি করেন তিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পটুয়াখালী পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই নৌরুটের নব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।