মো: আল মাসুম খান,
খুলনা বিভাগের মাগুরা পৌরসভার সাজিয়াড়া গ্রামের একটি ছাত্রাবাসে গড়ে তোলা টর্চারসেলে অপহরণকৃত পাঁচ ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছেন সেনা সদস্যরা। অপহরণ ও আটক করে টর্চার করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইসতিয়াক আহমেদ শান্ত নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। শান্ত মাগুরা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানজেল হোসেনের বড় ভাই রফিকুল ইসলামের ছেলে। বিভিন্ন সূত্র জানায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাগুরা সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে সাজিয়াড়া গ্রামের এসএম ছাত্রাবাসে আটকে রাখা ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত রাজীব সরদার, হৃদয় সরদার, বাবু শেখ, ওসমান শেখ এবং রিয়াদ ইসলাম নামের ওই পাঁচ ব্যবসায়ীর বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ফা গ্রামে। এই পাঁচজন নানা ধরণের ইলেক্ট্রনিক পণ্য ফেরি করে বিক্রির উদ্দেশ্যে গত ২১ মে মাগুরা এসে ইসতিয়াক আহমেদ শান্তর খপ্পড়ে পড়েন। গোপন সূত্রে জানা যায় ইসতিয়াক হোসেন শান্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদেরকে কৌশলে সাজিয়াড়া গ্রামের ওই ছাত্রাবাসে নিয়ে গিয়ে আটকে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। কিন্তু তারা নিজেদের আর্থিক অসংগতির কথা জানালে শান্ত আরও ৭ থেকে ৮ জনকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার রাতভর এবং বুধবার দিনের বিভিন্ন সময়ে পালাক্রমে তাদের ওপর নির্যাতন চালায়। এলাকাবাসী জানায়, মাগুরার মহম্মদপুরে বাড়ি মহসিন নামে এক প্রবাসী ওই ছাত্রাবাসটির মালিক। হুরাইরা নামে সাজিয়াড়া গ্রামের একটি ছেলের মাধ্যমে তিনি ছাত্রাবাসটি পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ইসতিয়াক আহমেদ শান্ত ছাত্রাবাসে বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করে সেটির বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দখলে দেয়। পরে নিয়মিত দিনে এবং রাতের বিভিন্ন সময়ে সেখানে বন্ধুদের নিয়ে মাদকের আড্ডা বসিয়ে আসছিলেন। গত মঙ্গলবার ওই পাঁচ ব্যবসায়ীকে আটকের পর তারা সেখানে সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে উচ্চমাত্রায় মিউজিক চালায় তাদেরকে নির্যাতন করে বলেও গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের জানায় এলাকাবাসী। বুধবার রাতে ওই ছাত্রাবাস থেকে আটক ব্যবসায়ীদের ছাড়াও নানা ধরণের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে মাগুরা সেনা ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা। পরে রাতেই তাদেরকে মাগুরা সদর থানা পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়। মাগুরা সদর থানার ভাররাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আইয়ুব আলী গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযুক্তদের আটকের জন্য আমাদের থানা পুলিশের অভিযান চলমান আছে।