মো: আল মাসুম খান
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বিরাসার এলাকায় চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এলপি গ্যাস সিলিন্ডারবাহী একটি ট্রাক উল্টে গিয়ে আগুন ধরে গেলে অন্তত দুই শতাধিক এলপি গ্যাস সিলিন্ডার রাস্তায় পড়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার ৪ জুন ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে ব্যাপক আগুন, ভয়ানক শব্দ ও ধোঁয়ার কারণে চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মহাসড়কে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার শাহবাগ থেকে ছেড়ে আসা সিলিন্ডারবাহী একটি ট্রাক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মধ্যপাড়ার বর্ডার বাজারের দিকে যাচ্ছিল। পথে শহর বাইপাসের বিরাসার এলাকায় বড় একটি গর্তে চাকা পড়ে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। সামনে থাকা একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে সংঘর্ষে মুহূর্তেই ট্রাকটিতে আগুন ধরে যায় এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে ট্রাকের সিলিন্ডারগুলোর মধ্যে। কিছুক্ষণের ব্যবধানে একের পর এক বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের ঘুমন্ত মানুষ আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। বহু দূর থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাস গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের বলেন, সম্ভবত প্রাইভেট কারের ইঞ্জিন থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, যা পরে ট্রাকের সিলিন্ডারে ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাকে থাকা সব সিলিন্ডারই বিস্ফোরিত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি টাকারও বেশি হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের বলেন, মহাসড়কের দীর্ঘ দিনের ভাঙাচোরা অবস্থা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবই এই দুর্ঘটনার মূল কারণ। বৃষ্টির কারণে গর্তে পানি জমে থাকায় ট্রাকের চাকা গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়। রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। এত বড় গর্তে না পড়লে এমন দুর্ঘটনা হতো না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মোজাফফর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, গ্যাসের সিলিন্ডার দুর্ঘটনার পর দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করে। সকাল ৯টা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলেছে।