প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্কঃ
ইরানের অন্যতম প্রধান ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার করে চালানো বোমা হামলায় ‘গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। মঙ্গলবার (১ জুলাই) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতির নতুন এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
আরাঘচি বলেছেন, ফোর্দোতে আসলে কী ঘটেছে, সঠিকভাবে তা কেউই জানেন না। তবে এখন পর্যন্ত আমরা যা জেনেছি, তা হলো—সেখানকার স্থাপনাগুলো গুরুতর এবং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা বর্তমানে এই স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণ করছে। এই কাজ শেষে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সাক্ষাৎকারে আব্বাস আরাঘচি বলেন, ইরানের পারমাণবিক শক্তি ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ় সংকল্প কেবল সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে ধ্বংস করা যাবে না। তেহরানের শীর্ষ এই কূটনীতিক বলেন, বোমা হামলার মাধ্যমে কেউ (শান্তিপূর্ণ ইউরেনিয়াম) সমৃদ্ধকরণের প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানকে ধ্বংস করতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গোপন গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে অবগত অন্তত চার কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গত রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলায় ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের ফোনালাপে আড়ি পেতে তথ্য সংগ্রহ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন গোয়েন্দারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম করে দেখানোর চেষ্টা করছেন ইরানি কর্মকর্তারা।
গত ১৩ জুন বিনা উসকানিতে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ১২ দিন ধরে চলা এই যুদ্ধে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাসহ অন্যান্য অনেক সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামো নিশানা করে ইসরায়েল।
সামরিক ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে ইসরায়েলকে সহায়তা করে আসা যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের শেষের দিকে ইরানের মধ্য ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার হামলা চালায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন বিমান হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘পুরোপুরি এবং চূড়ান্তভাবে’ ধ্বংস করে দিয়েছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানি পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করতে আরও সময় লাগবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফাঁস হওয়া এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ফোর্দো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহানে মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস নয়, কেবল নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য পিছিয়ে গেছে বলে জানানো হয়।