প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্কঃ
জামালপুর শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ‘বিজয় চত্বর’ ভেঙে সেখানে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে গণপূর্ত বিভাগ। শহরের শেখের ভিটা এলাকায় জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ বাইপাস সড়কের মোড়ে অবস্থিত এই চত্বরটি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ও প্রতীকী গুরুত্ব বহন করে আসছিল।গত বছরের ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিনে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে চত্বরটির নামকরণ করা হয় ‘বিজয় চত্বর’ হিসেবে। এর আগে, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনাটি নির্মিত হয়, যার নাম রাখা হয়েছিল ‘মির্জা আজম চত্বর’—আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের নামে।
চত্বরের মূল স্তম্ভের চারপাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মির্জা আজমের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছিল। এছাড়াও দুই পাশের সড়কে সরকারপ্রধানের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ছবি ও পানির ফোয়ারা বসানো হয়।
গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই চত্বরটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্থানীয় ছাত্র-জনতা একে ‘বিজয় চত্বর’ নামকরণ করে। চলতি বছরের ৮ জুলাই সকাল থেকে গণপূর্ত বিভাগের উদ্যোগে সেখানে ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। সারাদেশব্যাপী একযোগে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ’ স্থাপনের অংশ হিসেবে জামালপুরেও এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই সিদ্ধান্তকে কেউ কেউ সরকারের রাজনৈতিক প্রতীক নির্মাণের প্রয়াস হিসেবে দেখলেও, অনেকেই এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় স্থানীয় ছাত্র-জনতার একাংশ বলছেন, “জুলাই শহীদদের স্মরণে এই স্তম্ভ নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।”
তবে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য জানতে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেনকে একাধিকবার ফোন করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতীকী স্থাপনাগুলো ভেঙে ফেলা বা নাম পরিবর্তনের এই প্রবণতা সাময়িক আলোচনার জন্ম দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে ঐতিহাসিক স্মৃতি ও জনমতকেই প্রতিনিধিত্ব করবে ইতিহাস।