মো: আল মাসুম খান
বাগেরহাটের ফকিরহাটে হ্যামকো কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান এ্যানজিন মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজে সংঘটিত কোটি টাকার ডাকাতির ঘটনায় লুট হওয়া মালামাল উদ্ধার ও ঘটনায় জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও ফকিরহাট থেকে আরও সাতজনকে আটক করা হয়।
আজ বুধবার ৯ জুলাই, দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো: তৌহিদুল আরিফ।
উদ্ধার মালামালের মধ্যে রয়েছে ১০ টন অ্যালুমিনিয়াম বার, এক টন তামা ও আড়াই টন তামার তার, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ২ লাখ টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা এলাকার মৃত আব্দুল ছাত্তারের ছেলে স্বপন হোসেন (৩২), বরিশাল জেলার আগইলঝড়া উপজেলার পতিহার পূর্বপাড়া এলাকার মৃত আদম আলী খানের ছেলে মো: জলিল খান (৪৫), রাজবাড়ি সদরের রাম কান্তপুর এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে জয়নাল ফকির (৪৫), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ঢাকিরগাঁও এলাকার মো: ছিদ্দিক মৃধার ছেলে মো: ইকবাল হোসেন (৩৫), ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার তারাগাজী এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে আল আমিন (৩৬), নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার দক্ষিণ মানিকপুর এলাকার গোলাম সরোয়ারের ছেলে মো: গোলাম মর্তুজা (৩৬), চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকার মৃত মাহামুদুর রহমানের ছেলে মো: আশরাফুল ইসলাম (৩৫), বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বৈলতলী এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে মো: আব্দুর রহমান (৪২), খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার দক্ষিণ খাজাডাঙ্গা এলাকার ইব্রাহিম শেখের ছেলে মো: রহমত শেখ (৩৭)।
এদের মধ্যে ৫ জন সরাসরি ডাকাতির সাথে জড়িত, ২ জন ডাকাতির মাল ক্রেতা এবং ২ জন কোম্পানির নিরাপত্তা প্রহরী, যারা সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত ৪ জুলাই রাতে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি এলাকায় মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হ্যামকো কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাঞ্জিন মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজে ডাকাত দল হানা দেয়। তারা নিরাপত্তা প্রহরী ও শ্রমিকদের বেঁধে রেখে এক কোটি ২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয়। পরের দিন, কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপক মো: আশরাফুল মিজান বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তৎপর ছিল। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৭ জুলাই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির মালামালসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকায় অভিযান চালিয়ে আরও পাঁচজনকে এবং ফকিরহাট থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা অন্য কোনো ডাকাতির সঙ্গেও জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, ফ্যাক্টরির ভেতর থেকে কেউ জড়িত রয়েছে কি না, সেই দিকটিও তদন্তের আওতায় রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কারখানাটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল ছিল, এবং তারা বিপুল পরিমাণ মালামাল সেখানে রেখেও পুলিশকে জানায়নি। তাই কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।