প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পত্রপত্রিকা কী লিখল সেটা দেখে নার্ভাস হওয়ারও কিছু নেই, ঘাবড়াবারও কিছু নেই। বরং দেখবেন এর কোনো সত্যতা আছে কি না? যদি না থাকে সেটাকে সোজা ডাস্টবিনে ফেলে দেবেন, পড়ারও দরকার নেই। এটা হলো আপনাদের প্রতি আমার পরামর্শ। সোমবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর এবং বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজেও অনেক পত্রিকা পড়ি না। কেন? দেশটা আমার। দেশকে ভালোভাবে চিনি, জানি। সেই ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, জন্ম নিয়েছি জাতির পিতার ঘরে। এ দেশের কীভাবে ভালো হয়, মন্দ হয় আমাদের জানার কথা বেশি, আর কারও না। আর কেউ জানতে পারে না। সরকারি কর্মকর্তাদের দেশের পরিচালক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দেশের পরিচালক। আমরা পাঁচ বছরের জন্য আসি। আপনারা স্থায়ী সময় নিয়ে আসেন। আমরা দেশের মাটি ও মানুষের কথা চিন্তা করে রাজনীতি করে এত দূর এসেছি। হঠাৎ করে অস্ত্র হাতে ক্ষমতা দখল করে, টেলিভিশনে ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় আসিনি। তাই দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি-মানুষ আমার চেনা। দেশের উন্নয়ন করা আমাদের লক্ষ্য। সেটা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কে কী লিখল, সেটাতে ঘাবড়ে যাওয়া, সেটা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করা উচিত না। নিজের আত্মবিশ্বাস, বিবেক-বিবেচনা নিয়েই সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করবেন। এ আত্মবিশ্বাস, মর্যাদা নিয়ে কাজ করলে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। সরকারি চাকরিজীবীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা ২০১৫ সাল থেকে বৃদ্ধি করে দিয়েছি। তার কারণ, যারা কাজ করবেন তাদের যদি অনবরত নিজের সংসার নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়, তাহলে দেশের কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেটা বিবেচনা করেই আপনাদের জীবনটা যাতে সুন্দর হয়, সেজন্য বাসস্থান থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ- সব দিকে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ যেমন গড়তে চাই, সেই সঙ্গে যারা কাজ করেন তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা যাতে অর্জিত হয় সেদিকেও দৃষ্টি দিয়েছি। সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, যেখানে কোনো অনিয়ম দেখা দেবে, আপনারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। অবশ্যই আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। দুর্নীতি ধরতে গেলে পরে সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়, আমরা এটা বিশ্বাস করি না। দুর্নীতি খুব কম লোকই করেন কিন্তু তার বদনামটা হয় বেশি। এ কারণে যারাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের বদনাম হবে কি না, সেটা কেয়ার করি না। আমি সমাজটাকে আরও শুদ্ধ করে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে ব্যবস্থা নিতে চাই। সে জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি যে, কোনোমতেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না।