প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
বাগেরহাটের রামপালে চলছে মাছের ঘের দখল ও চাঁদাবাজির মহোৎসব। এলাকাভিত্তিক বাহিনী গড়ে তুলে দখলবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকটি চক্র। আর এর প্রতিবাদ করলেই হামলাসহ চালানো হচ্ছে নির্যাতন। তবে পুলিশ বলছে, ইতিমধ্যে কয়েক জন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে, বাকিদেরও আটক করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাদা সোনাখ্যাত চিংড়ি চাষের জন্য বিখ্যাত বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই উপজেলায় ঘের দখল ও পালটা দখলের অভিযোগ উঠেছে। এই উপজেলার ভোজপাতিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়ও থেমে নেই ঘের দখল ও চাঁদাবাজি। বিভিন্ন ট্যাগ লাগিয়ে কালিকাবাড়ী গ্রামে মাছভর্তি ঘের দখলের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়েও চাঁদার দাবিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস কারো নেই। প্রতিবাদ করায় অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার পৈশাচিক কায়দায় হামলা করে অনেককে গুরুতর আহত করা হয়েছে। পুরুষশূন্য অনেক বাড়িতে গিয়ে ঘর পোড়ানো, হামলা-ভাঙচুর, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকিধমকি অভিযোগ রয়েছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। সুবিধাভোগী এই চক্র ইতিমধ্যে কালিয়াকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছে। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ছোট শিশুদের নিয়ে মায়েদের দিন কাটছে চরম আতঙ্কে।
ঐ গ্রামের লোকমান হাওলাদের স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী শাহিদা বেগম জানান, ঘের দখলের প্রতিবাদ করায় তাদের বাড়ির পুরুষদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারা কেউ বাড়িতে থাকে না। গভীর রাতে একদল লোক গিয়ে তাদের কয়েকটি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
একই গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা স্বপ্না বেগম প্রথমে কোনো কথা বলতেই রাজি হননি। পরে বলেন, তাদের বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। প্রতিদিন রাতে দল বেঁধে দা, লাঠি নিয়ে একদল লোক মহড়া দেয়। তারা বাড়ির ভেতর ঢুকে বিভিন্নভাবে গালিগালাজ ও হুমকিধমকি দেয়।আলামিন শরিফের ছেলে মুদি দোকানদার রিয়োজ শরিফ জানান, চাঁদার দাবিতে তার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ওরা। তার দোকানের ১০ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হওয়ার পথে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকা রামপাল উপজেলার কালিকা বাড়ি গ্রামের মাসুদ হোসেন (৪৯) বলেন, ঘের দখলে প্রতিবাদ করায় তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় তিন আসামিকে আটক করে পুলিশ। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দখলবাজ ওই চক্রটি। তারা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। তিনি চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।এ বিষয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মো. সেলিম রেজা বলেন, তিন জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।