শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
খুলনায় পথশিশুদের নিয়ে এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন। প্রশ্নে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি, বাতিল হলো পরীক্ষা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফের চালু করলো যুক্তরাষ্ট্র জুলাই শুধু বিপ্লবের না, হান্নান মাসউদের মতো ধান্দাবাজদের কপাল খোলার মাস : নির্ঝর এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, ভয় দেখানোর জন্য: নাহিদ ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালতে দুইজনকে দণ্ড দেওয়ায় থানায় হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত ২০ বিচারিক আদেশে জামায়াতের পুরনো নিবন্ধনই বহাল, গেজেট প্রকাশ করল ইসি। জাতীয় সমাবেশ সফল করতে বৈঠক ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান; গোলাম পরওয়ারের। বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে রাজনৈতিক ঐকমত্য : অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বরিশালে যুগান্তর ব্যুরো প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা ; বিএমএসএফের প্রতিবাদ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান: ‘কেএনএফ’-এর শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ দুইজন নিহত। শার্শা সীমান্তে ৭ কোটি টাকার স্বর্ণ ও ভারতীয় পণ্য উদ্ধার, আটক ১২ বিএনপির দফা নয়, অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান ও অ্যাকশন চাই: সারজিস আলম আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি কালীগঞ্জে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেষ্টুনীসহ বৃক্ষ রোপন ও অসহায় নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরন জলবায়ু মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুইডেন সহায়তা করছে: পরিবেশ উপদেষ্টা মাত্র দু’বছর পিছিয়েছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি : পেন্টাগন থাইল্যান্ডে আবারও ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী বদল : নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিতে প্রস্তুত রূপসায় শহীদ ইয়াসিনের করব জিয়ারত করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বীরগঞ্জে বিদায় প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিককে রাজকীয় সংবর্ধনা

বরিশালে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে হত্যা, নেপথ্যে মাদক কারবারের দ্বন্দ্ব

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ৩৪
আপডেটঃ মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:

বরিশাল শহরে এক ‘শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার’ অভিযোগে মো. সুজন (২৫) নামে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। স্থানীয়রা বলছেন, মাদক কারবারের দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এইদিকে নিহত পরিবার শুরু থেকে দাবি করছেন, এটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলছেন, মারধরকারীরা সুজনকে ধরে কীর্তনখোলা নদীর তীরে জিয়ানগর মাঠে নিয়ে যান। সেখানে একটি গাছের সঙ্গে উঁচু করে দুই হাত রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এতে অংশ নেন স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী প্রয়াত হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. বাঁধন, কাইয়ুম মুনশি, ইমনসহ ছয়-সাতজন। সন্ধ্যার দিকে সুজন নির্যাতনের ফলে গুরুতর আহত হলে তাকে পুলিশ উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি মারা যান।

ওই এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী দুই ব্যক্তি জানান, সুজন মাদকাসক্ত ছিলেন এবং স্থানীয় একটি মাদক কারবারি চক্রের হয়ে ইয়াবা ব্যবসা করতেন। মূলত এই কারবার নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে প্রতিপক্ষ শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগটিকে ব্যবহার করে সুজনকে ধরে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে এমন নির্যাতন করে।স্থানীয় অপর একটি সূত্র জানায়, এ ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বাচ্চু দুররানীর ছেলে সাব্বির হোসেনও ছিলেন। আর ঘটনার নেপথ্যে বাচ্চু দুররানীরও হাত ছিল।

এদিকে বাচ্চু দুররানী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এই ঘটনার সময় তার ছেলে মাঠে খেলছিল। আর তিনি খবর শুনে সন্ধ্যার আগে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে দেখেন, গাছের সঙ্গে বেঁধে সুজনকে পেটানো হচ্ছে। তিনি পেটাতে থাকা যুবকদের নিষেধ করলে তারা বাচ্চুর ওপরেও চড়াও হন। এরপর ইফতারের সময় হওয়ায় সেখান থেকে তিনি চলে আসেন।বাচ্চু আরও বলেন, সেখানে বাঁধনসহ কয়েকজনকে তিনি দেখেছেন। বাঁধন এলাকায় মাদক কারবার করেন। বাঁধনের সঙ্গে এ নিয়ে সুজনের দ্বন্দ্ব ছিল বলে শুনেছেন।

বাচ্চু দুররানী দাবি করেন, আমি ও আমার ছেলে জড়িত ছিল, এটা কেউ প্রমাণ করতে পারলে আমি বিচারের মুখোমুখি হতে রাজি। পুলিশের সঙ্গেও আমি এ বিষয়ে কথা বলেছি।অন্যদিকে নিহত সুজনের মা মঞ্জু বেগমের অভিযোগ, তার ছেলে শিশুটিকে ধর্ষণ করেনি। তারা এই ঘটনা সাজিয়েছিল সুজনকে ফাঁসাতে। শুক্রবার ঘটনার পর শনিবার দুপুরে বাচ্চু দুররানী তার বাসায় এসে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বাচ্চু ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছিলেন, সুজনকে মানুষ পিটিয়ে মারবে।

তবে বাচ্চু দুররানী এই অভিযোগও অস্বীকার করে বলেন, ‘সুজনের মায়ের সঙ্গে আমার রাস্তায় দেখা হয়েছিল। তখন উনি আমাকে মীমাংসা করে দিতে অনুরোধ করেছিলেন। আমি তখন এটা মীমাংসাযোগ্য না বলে ওনাকে (সুজনের মা) ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।’নিহত সুজনের ভাই মো. আকাশ বলেন, তার ভাইকে স্থানীয় মো. বাঁধন, রুবেল, সাদ্দাম হোসেন, রাজীব হাওলাদার ধরে নিয়ে বেঁধে মারধর করেন। এ সময় কাইউম মুনশি, জামাল মুনশি, বাচ্চু দুররানী উপস্থিত ছিলেন। তবে বাঁধন, রুবেল, সাদ্দাম ও রাজীব হাওলাদার ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।

আকাশ দাবি করেন, সুজনকে দিয়ে এলাকার একটি মাদক কারবারি চক্র ইয়াবা বিক্রি করাতো। সুজনও মাদকাসক্ত ছিলেন। মাসখানেক আগে স্বজনদের পক্ষ থেকে সুজনকে মাদক বিক্রি ও সেবন না করতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এমনকি বাড়ি থেকে তাকে মোংলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপরও সুজনকে ওই চক্র বারবার তাদের সঙ্গে কাজে যেতে তাগিদ দিলেও সুজন আর যাননি। এতে ক্ষিপ্ত হয় ওই চক্র। সুজন সম্প্রতি মোংলা থেকে বরিশালে ফিরেছিলেন বলে জানান তার ভাই।সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, ‘নিহত সুজন অপরাধী হতে পারে; কিন্তু একজন অপরাধীকে শাস্তি দিতে হলে অপরাধ প্রমাণের জন্য তদন্ত এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার জন্য পুলিশ ও আদালত আছে। কেউ ইচ্ছা করলেই এভাবে প্রকাশ্যে কাউকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মেরে ফেলতে পারে না। এটা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ। এ ঘটনায় কারা জড়িত, তাদের ভিডিও দেখেই শনাক্ত করা গেছে। তাই তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা উচিত। কিন্তু ঘটনার তিন দিন পরেও তাদের গ্রেপ্তার না হওয়াটা বিস্ময়কর।’

এই বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘সুজনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের ভিডিও আমাদের হাতে এসেছে। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা শনাক্ত করা হয়েছে। তবে সুজনের মরদেহ দাফন করার জন্য ওর পরিবার গ্রামের বাড়ি বাউফলে আছে। তাই এ ঘটনায় মামলা হয়নি। আমি তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। মঙ্গলবার মিলাদ শেষে বরিশালে ফিরলে মামলা হবে।’গত ১৪ মার্চ দুপুরে বরিশাল শহরের ধান গবেষণা সড়কে চার বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে একই এলাকার তরুণ সুজনের (২৫) বিরুদ্ধে। সুজন ওই এলাকার ইজিবাইক চালক মনির হাওলাদারের ছেলে। শিশুটিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে তার মা শনিবার বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করছিল। এর মধ্যেই শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সুজনকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com