সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
জেটিতে জামায়াত নেতার ‘খাস কালেকশনের’ নামে অর্থ আদায়, ইউএনওর হস্তক্ষেপে বন্ধ শেখ হাসিনা অপরাধ করেননি, উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন: আইনজীবী আমির হোসেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ ৩ নেতাকে অব্যাহতি দিলেন জি এম কাদের কালীগঞ্জ থানা প্রেস ক্লাবের আয়োজনে কালীগঞ্জের কর্তব্যরত সাংবাদিকদের নিয়ে মৌসুমি ফল উৎসব এবং নৌ-ভ্রমন অনুষ্ঠিত বরগুনার ভূতমারা খাল খদন ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণ দাবি এলাকাবাসীর মানববন্ধন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার অপসারণের দাবিতে খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলন দেবহাটা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারন সভায় কমিটির পূর্নগঠন লোহাগড়ায় কুখ্যাত ডাকাত সর্দার গোল্ড হৃদয় গ্রেপ্তার খুবিতে ‘উইক অব ওয়েলকাম’ শুরু: মাদক ও র‌্যাগিংকে না বলার শপথ শিক্ষার্থীদের। খুলনায় ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে হেফাজতের স্মারকলিপি। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সংঘর্ষ: ৩৩ সাংবাদিকের জামিন মঞ্জুর। সরকারি হাসপাতাল হইতে ভুয়া ডাক্তার আটক। পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার রায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড। ‘জুলাই’ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল কেন, জানালেন আসিফ মাহমুদ রেস্ট হাউসে নারীকাণ্ডের সেই ওসি প্রত্যাহার চাকরির ইন্টারভিউতে ভালো করবেন যেভাবে মনে আছে তো, কারেন্টের খাম্বা কেস: ফয়জুল করিম জুলাইয়ে ‘প্রোফাইল লাল’ করার পেছনে ছিলেন শিবির নেতা ফরহাদ জামায়াত আমীরের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদলের সৌজন্য সাক্ষাৎ। আশুরা উপলক্ষে খুলনায় শিয়া সম্প্রদায়ের সাথে কেএমপির মতবিনিময় সভা: নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত পুলিশ প্রশাসন।

অপরাধ দমনে দরকার ন্যায়বিচার, গণপিটুনি নয়

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ৪৫
আপডেটঃ বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:

আইন ও বিচারব্যবস্থা যখন দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন জনরোষ বিকল্প পথ বেছে নেয়। সম্প্রতি আমরা লক্ষ করছি, গণপিটুনির মতো সামাজিক অপরাধ ভয়ানক রূপ নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে মানুষ গণপিটুনির নামে বিচার করছে, যা একটি বিপজ্জনক প্রবণতা। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে না, বরং আমাদের সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধকেও ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। বিদেশি ভাষা থেকে ধার করে যাকে ‘মব ট্রায়াল’ বলছি, তাকে বাংলায় বোধ হয় ‘উত্তেজিত জনতার বিচার’ বলা যায়, যদিও এটাকে পত্রপত্রিকা বা পুলিশি ভাষায় ‘গণপিটুনি’ বলেই উল্লেখ করা হয়। সাম্প্রতিক কিছু নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কারণে শব্দটি এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত।শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনা জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অপরাধীরা দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে। আইন তুলে নিচ্ছে নিজের হাতে। গণপিটুনির মাধ্যমে অপরাধীদের বিচার করার প্রবণতা নতুন নয়, তবে এটি যখন ধারাবাহিক ও সহিংস রূপ নেয়, তখন তা রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে।

গণপিটুনির মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে আইনের প্রতি অবিশ্বাস, গুজব ও ভুল তথ্য, তাত্ক্ষণিক প্রতিশোধ এবং জনসমাগমের উগ্রতা। অনেক সময় মানুষ মনে করে, অপরাধীকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও যথাযথ শাস্তি হবে না, ফলে তারা নিজেরাই বিচার করতে চায়। সোশ্যাল মিডিয়া বা মুখে মুখে ছড়ানো গুজবের কারণে নিরপরাধ ব্যক্তিরাও হামলার শিকার হতে পারে। এছাড়া কেউ চুরি, ছিনতাই বা অপহরণের অভিযোগে ধরা পড়লে উত্তেজিত জনতা প্রতিশোধ নিতে উদ্যত হয়। ভিড়ের মধ্যে ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তাশক্তি কমে যায়, ফলে দলগত উগ্রতার কারণে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।গণপিটুনির পরিণতি মারাত্মক এবং সমাজের জন্য গভীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। অনেক সময় গুজব বা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে নিরপরাধ ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটে কিংবা গুরুতর আহত হয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাড়লে জনগণের বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা কমে যায়, যা আইনের শাসনকে দুর্বল করে তোলে। এতে সমাজে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়, যা দীর্ঘ মেয়াদে সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতার চক্র তৈরি করতে পারে। ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা জন্ম নেয়, যা আরো সংঘর্ষের পথ তৈরি করে। এছাড়া, এ ধরনের ঘটনা বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করে।

যেহেতু এর মূল কারণ বিচারহীনতার সংস্কৃতি; ন্যায়বিচার বঞ্চনা-উদ্ভূত প্রতিকার পাওয়ার ইচ্ছা, তাই এর সমাধানে এটা নিশ্চিত করতে হবে কেউ যেন অপরাধ করে পার পেয়ে না যায়। গণপিটুনি রোধে আইনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও সামাজিক মূল্যবোধের উন্নয়ন অপরিহার্য। অপরাধীদের দ্রুত ও যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে উত্সাহিত না হয়। পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়া ও মুখে মুখে ছড়ানো গুজব প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করা এবং ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। শিক্ষা ও নৈতিকতার প্রসার ঘটিয়ে মানুষকে সহনশীল করে তুলতে হবে, যাতে তারা উত্তেজিত হয়ে সহিংসতায় লিপ্ত না হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, গণপিটুনি কোনো সমাধান নয়। এটি সাময়িক রাগের বহিঃপ্রকাশ হলেও দীর্ঘ মেয়াদে এটি আমাদের সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

লেখক :শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com