প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক
গত ২৭ জানুয়ারী গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা পেশীশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে খুলনার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু ঐতিহ্যবাহী পঞ্চবিথী ক্লাবের তালা ভেঙ্গে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ভবনটি দখল করে নেয়৷ এসময় তারা পঞ্চবিথী ক্লাবে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় পঞ্চবিথী ক্লাব কর্তৃপক্ষ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
ঘটনাটি দেশের প্রথম সারির মিডিয়াগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচার হলে খুলনা মহানগর গণধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এসকে রাশেদকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের পরও তিনি ভবনটি দখলে রেখেই রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। এবং পরবর্তীতে ভবনটিতে আরো অঙ্গ সংগঠনগুলোর সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়।
দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনগণ, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকবৃন্দের চাওয়ার প্রেক্ষিতে গত ১৮ মার্চ স্থানীয় ছাত্র-জনতার একটি প্রতিনিধিদল ক্লাবটি খালি করার অনুরোধ জানাতে গেলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। একপর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়, যার ফলে ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের লাইভ ও ভিডিওতে এই ঘটনা সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এবং ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে একপর্যায়ে এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ছাত্র-জনতা ও এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিরোধে দখলদার গণধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
প্রকৃত ঘটনা:
খুলনায় গণঅধিকার পরিষদের ২ টা জেলা ও মহানগর কার্যালয় রয়েছে৷ একটি রাজনৈতিক দলের একাধিক জেলা ও মহানগর কার্যালয় থাকার নজির নেই আর গণঅধিকারের মতোন দলের ক্ষেত্রে সেটার হয়তো প্রয়োজনও নেই।
প্রকৃত ঘটনা হলো, খুলনার গণঅধিকার পরিষদ ২ ভাগে বিভক্ত। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসকে রাশেদ অপর গ্রুপের নেতৃত্বে মহানগর সভাপতি বিল্লাল হোসেন৷
মহানগর সভাপতি নগরীর হাদীস পার্ক এলাকায় “জেলা ও মহানগর কার্যালয়” নামে একটি ভাড়ার অফিস ব্যাবহার করেন৷
অপরদিকে মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসকে রাশেদ অবৈধভাবে দখলকৃত ক্লাবটি “জেলা ও মহানগরের কার্যালয়” হিসেবে ব্যবহার করেন।
গত ১৮ মার্চ রাতে দখলবাজ এসকে রাশেদ ও তার অনুসারীরা ছাত্র-জনতার ধাওয়া খেয়ে বিল্লাল হোসেনের ভাড়া করা অফিসের দিকে পালিয়ে যান। এ সময় বিল্লাল হোসেনের অফিসে থাকা নেতাকর্মীরা আক্রমণের আশঙ্কা করে পালিয়ে যাওয়া গ্রুপকে আবারও ধাওয়া করেন। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন বলে আমরা খবর পেয়েছি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা নূরুল হক নূর হস্তক্ষেপ করেন। তার মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নামে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে আমরা খবর পেয়েছি। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।