মো: আল মাসুম খান

সুন্দরবনে দাবীকৃত মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ সত্ত্বেও জলদস্যুদের হাতে অপহৃত দুই জেলে এখনও বাড়ি ফেরেনি। গত সপ্তাহে সুন্দরবনের ফিরিঙ্গি ও ডিঙিমারী এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। অপহৃতরা হচ্ছে মফিজুর রহমান(৪৫) শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের মৃত নেছার শেখের ছেলে এবং আব্দুর রহিম (২৮) একই গ্রামের আশরাফ আলী গাজীর ছেলে। স্থানীয়দের ও তাদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে মাছ শিকারে যাওয়ার পর দুলাভাই বাহিনীর পরিচয়ে একদল জলদস্যু ভুক্তভোগীদের অপহরণ করে। পরবর্তীতে উভয়ের মুক্তিপণ বাবদ ৩৫ ও ৪০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে জলদস্যুদের দাবি করা টাকা মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা হলেও জিম্মি দুই জেলেকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। এদিকে মুক্তিপণ পরিশোধের পর চারদিন অতিবাহিত হওয়ায় ভুক্তভোগীর পরিবার উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে। ফিরে আসা জেলেরা জানায়, ৯ সদস্যের জলদস্যু দলটি নিজেদের ‘দুলাভাই বাহিনী হিসেবে দাবি করে। তবে গাজী বাহিনী’ পরিচয়দানকারী জলদস্যুদের আটজনকে নতুন পরিচয়ে দেখা গেছে। এসব জেলেদের দাবি, দলনেতা পরিবর্তন করে একই দল নতুন বাহিনীর পরিচয়ে সুন্দরবনে দস্যুতা করছে। কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর এলাকার আবজাল ও তার শ্যালক একই উপজেলার রবিউল এই বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছে। গত রোববার (২৩ মার্চ) সুন্দরবনের আগুনজ্বালা এলাকা থেকে একই বাহিনীর হাতে অপহৃত রবিউল ইসলাম তিনদিন পর বাড়িতে ফিরেছেন। সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক গণমাধ্যমকে জানান, ভুক্তভোগীর স্বজনরা এসব বিষয় তাদের কাছ থেকে গোপন করে। বরং কাউকে কিছু না জানিয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে আপোষ করে টাকার বিনিময়ে স্বজনদের ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চালায়। শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ গনমাধ্যমে সাংবাদিকদেরকে জানান, অপরাপর বাহিনীর সহায়তা ছাড়া সুন্দরবনের ভিতরে অভিযান চালানো দুরূহ ব্যাপার। অপহরণের শিকার জেলেদের স্বজনরা তাদের কাছে কোন ধরণের অভিযোগ দায়ের করেনি। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই গোপন সমঝোতায় মাধ্যমে স্বজনদের মুক্তির চেষ্টা চালায়।