শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফের চালু করলো যুক্তরাষ্ট্র জুলাই শুধু বিপ্লবের না, হান্নান মাসউদের মতো ধান্দাবাজদের কপাল খোলার মাস : নির্ঝর এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, ভয় দেখানোর জন্য: নাহিদ ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালতে দুইজনকে দণ্ড দেওয়ায় থানায় হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত ২০ বিচারিক আদেশে জামায়াতের পুরনো নিবন্ধনই বহাল, গেজেট প্রকাশ করল ইসি। জাতীয় সমাবেশ সফল করতে বৈঠক ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান; গোলাম পরওয়ারের। বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে রাজনৈতিক ঐকমত্য : অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বরিশালে যুগান্তর ব্যুরো প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা ; বিএমএসএফের প্রতিবাদ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান: ‘কেএনএফ’-এর শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ দুইজন নিহত। শার্শা সীমান্তে ৭ কোটি টাকার স্বর্ণ ও ভারতীয় পণ্য উদ্ধার, আটক ১২ বিএনপির দফা নয়, অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান ও অ্যাকশন চাই: সারজিস আলম আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি কালীগঞ্জে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেষ্টুনীসহ বৃক্ষ রোপন ও অসহায় নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরন জলবায়ু মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুইডেন সহায়তা করছে: পরিবেশ উপদেষ্টা মাত্র দু’বছর পিছিয়েছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি : পেন্টাগন থাইল্যান্ডে আবারও ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী বদল : নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিতে প্রস্তুত রূপসায় শহীদ ইয়াসিনের করব জিয়ারত করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বীরগঞ্জে বিদায় প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিককে রাজকীয় সংবর্ধনা টেলিকম খাতে নতুন নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ রূপসায় পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন

সোনার দাম বাড়ায় নেই ক্রেতা, ঈশ্বরদীতে স্বর্ণশিল্পীদের মানবেতর জীবনযাপন

ডেস্ক রিপোর্টঃ / ৩৮
আপডেটঃ মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:

লাগামহীন ভাবে সোনরা দাম বেড়ে যাওয়ায় জুয়েলারি ব্যবসায় কমেছে ক্রেতা। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ঈশ্বরদীর স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। একদিকে, বেচাকেনা কম থাকায় রোজগার বন্ধ। অন্যদিকে, কাজ না পেয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন স্বর্ণালঙ্কার কারিগররা। এই পরিস্থিতিতে ঈশ্বরদীর শতাধিক কারিগর (স্বর্ণশিল্পী) মানবেতর জীবনযাপন করছে। দীর্ঘদিন ধরে এদের কাজকর্ম প্রায় বন্ধ। তারা কেউ বেতনভুক্ত নয়। কাজ করলে মজুরি পায়। এখন সোনা বা রূপার সকল কাজই প্রায় বন্ধ।কারিগররা মূলত জুয়েলারি ও বড় দোকানের অর্ডারের কাজগুলো করে দেয়। এদের কেউ গড়িত, কেউ সিলা, নকশা, সেটিংসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। কারিগরদের পাশাপাশি ছোট ছোট দোকানদারও এসব কাজের সাথে জড়িত। দফায় দফায় সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় বৎসরাধিক সময়ে এসব কারিগরদের দুর্দিন চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন বিক্রেতারা। দিনে দুই একজন আসলেও দেখে দামাদামি করেই ফিরে যাচ্ছেন। স্বর্ণের মূলবৃদ্ধির পর ঈশ্বরদীর স্বর্ণালঙ্কারের দোকানগুলোর এমন অবস্থা। সোমবার (২১ এপ্রিল) ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। ফলে কমেছে ক্রেতারা সংখ্যা।

ক্রেতারা জানায়, ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে সোনার দাম। আগে মানুষ প্রয়োজন ও শখে স্বর্ণ কিনলেও, এখন দামের কারণে প্রয়োজনেও কিনেন না। এমনকি আত্মিয়-স্বজনের অনুষ্ঠানের দাওয়াতে এখন আর কেউ সোনার উপহার দিতে পারছেন না।

স্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে শখের বসে হাতের আংটি কিনতে এসেছিলেন রায়হানুল হক। দাম শুনে রীতিমত ঘামিয়ে গেলেন তিনি। কোনভাবেই মাসিক খরচের হিসাব করে কিনতে পারলেন না স্বর্ণের ১টি আংটি। কিছুণ নেড়েচেড়ে আবার রেখে দিলেন। তিনি বলেন, ‘শখের বশেই এসেছিলাম একটি আংটি কিনতে। কিন্তু দাম শুনে মাসিক হিসাব মিলিয়ে কিনতে পারলাম না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, আমরা শখের বসেই স্বর্ণালংকার কেনাকাটা করতাম। তবে বর্তমানে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির কারণে শখে তো দূরের কথা প্রয়োজনেও কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। একটি নাকফুলের দাম যেখানে সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত ছিল। এখন নাকফুল কেনার জন্য লাগছে ৩,০০০ টাকা।

এদিকে ক্রেতার সংখ্যা কমায় কমে গেছে কাজের পরিমাণ। স্বর্ণালঙ্কার কারিগররাও প্রায় বেকার। উপার্জন না থাকায় অনেকেই পরিবর্তন করেছেন পেশা। কাজ না থাকায় পুঁজি যতটুকু ছিলো তা শেষ হয়ে গেছে। এই দুরাবস্থার কথা কারিগররা কাউকে বলতেও পারছে না। তারা কোনদিন কারো কাছে হাত পাতেনি। তাই হাতও পাততে তারা জানে না। এই অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলার শতাধিক স্বর্ণের কারিগর অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছে।

ছোট দোকানদার ও করিগর বিবেক কর্মকার বলেন, প্রতিমাসে অন্তত ১৫-২০ ভরি স্বর্ণের কাজ করতাম, কিন্তু দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ কমে গেছে। এখন প্রতিমাসে তিন থেকে চার ভরি স্বর্ণের কাজ পাওয়াই কষ্টসাধ্য। আগামীতে কি হবে সেটা বুঝতে পারছি না। অন্য কোনো কাজও জানা নেই। আগে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করলেও এখন ১০ হাজার টাকাও হয় না।

কারখানার কারিগর অসীম বলেন, কাজ না থাকায পুঁজি যতটুকু ছিলো তা শেষ হয়ে গেছে। ঈদের আগের দুই-তিনমাস স্বর্ণশিল্পীদের কাজ বেড়ে যায়। ঈদেও কাজ হয়নি। অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটছে। ভাবছি এই পেশা ছেড়ে দিয়ে অটো রিকশা বা সিএনজি চালাব।

এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বড় বড় ব্যবসায়ী ও মহাজনরা। কলেজ রোডের মহাজন সজিব কর্মকার বলেন, সোনার কাজকাম নেই, তাই বেচাকেনাও নেই। ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম সোমবার এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। এতো দাম দিয়ে কে শখ পূরণ করবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের অর্ডার না থাকলে কারিগরদের কাজ থাকবে কিভাবে। আমরাই না চলতে পারলে তারা কিভাবে চলবে। আমাদের ভবিষ্যৎ কি হবে তা এখনই বুঝতে পারছি না। সৃষ্টিকর্তার ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিলন কর্মকার জানান, ঈশ্বরদীতে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭৮টি দোকান রয়েছে। কারিগরের (স্বর্ণশিল্পী) সংখ্যা প্রায় শতাধিক।

স্বর্ণশিল্পী সমিতির সভাপতি সাব্বির আহমেদ বলেন, দোকানদার ও কারিগরদের চরম দূর্দিন চলছে। রবিবার আমার দোকানে বউনি হয়নি। মাঝেমধ্যে শুধুমাত্র নাকফুল অথবা শিশুদের জন্য আংটি কিনতে কয়েকজন ক্রেতার দেখা মেলে। আর কিছু ক্রেতা শুধুমাত্র পুরাতন গহনাকে পরিষ্কার করাতে নিয়ে আসছেন। সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন কারিগররা বসেই থাকছেন। আমরা তাদের কাজ দিতে পারছি না। তাই এ পেশা থেকে অনেকেই এখন ভিন্ন ভিন্ন পেশা বেছে নিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে শুধু কারিগররাই নয় দোকান মালিক ও মহাজনেরা একসময় দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Theme Created By ThemesDealer.Com