প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্ক:
শেয়ার বাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা। তারা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের অপসারণের দাবি করেছেন। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনসহ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে বিনিয়োগকারীরা এই বিক্ষোভ করেন। তারা শেয়ার বাজারের পতনের জন্য বিএসইসির ব্যর্থতাকে দায়ী করে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
বেলা আড়াইটার দিকে মতিঝিলে শাপলা চত্বরের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে বিকাল ৩টার দিকে শাপলা চত্বর থেকে বিক্ষোভমিছিল নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
বিক্ষোভকালে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘গত দুই মাসে টানা দরপতনের ফলে বিনিয়োগকৃত অর্থের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কমে গেছে। পুঁজি হারিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব।’ বিএসইসির বর্তমান কমিশনের প্রতি কোনো আস্থা নেই। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় তারা প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম মানিক বলেন, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পুঁজিবাজার ধ্বংস হয়ে গেছে। কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী ফোর্সড সেলের স্বীকার হয়ে শূন্য হাতে চলে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজার সংস্কার করছে। কিন্তু এমন সংস্কার হচ্ছে যে, গত কয়েক মাসে পুঁজিবাজারের ৭০ থেকে ৮০ হাজার মূলধন হারিয়ে গেছে। এভাবে আর চলতে দেওয়া হবে না।
টানা আট কার্যদিবস সূচকের পতন এদিকে গতকালও দেশের শেয়ার বাজারে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এতে মূল্যসূচকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ নিয়ে টানা আট কার্যদিবস সূচক কমল। লেনদেনচিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ডিএসইতে লেনদেনকৃত মোট ৩৯৫টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১৯টির, কমেছে ২১৪টির। আর ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪.০৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ০.৬৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১২১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৭.৬৭পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সূচকের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনও কমেছে।
দেশের প্রধান এই স্টক এক্সচেঞ্জে গতকাল ৩০৬ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অন্যবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনকৃত মোট ২০৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭২টির, কমেছে ১১৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির দর। এদিন এই বাজারের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৪.০২ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ১১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গতকাল সিএসইতে ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬ কোটি ৭ লাখ টাকা।