মো: আল মাসুম খান,
কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলারের দুর্নীতি এবং বন্দীদের সাথে খারাপ আচরণের কারনে কারাগারে আটক বন্দিরা অতিষ্ঠ, জেলার মাসুমকে অবিলম্বে প্রত্যাহার না করলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুমের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের কারনে, লাঞ্চিত হয়ে সূর্যমুখী সেলের দ্বিতীয় তলায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করছেন সাভারে বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। কারাগারের একটি সূত্র থেকে জানা যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ডিটেনশনে (অন্তরীন) থাকা হাজতি বন্দী, বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুর রহমান সুজনের গলায় ফাঁস দেওয়া সরাসরি দেখে একই সেলে আটক বন্দি ষ্টোক করে , সূত্রটি আরও জানান আজ ১৫ জুন আনুমানিক সকাল ১০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় গত ১৩ জুন শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুমের নেতৃত্বে কয়েকজন কারারক্ষী কারাগারের অভ্যন্তরের সূর্যমুখী সেলে তল্লাশি চালিয়ে সুয়ারেজ লাইনের পাইপ থেকে দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। মোবাইল ফোন দুটির মালিক কে নির্ধারণ করতে না পারায়, জেলারের নেতৃত্বে কারক্ষীরা বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনকে তার সেল থেকে বের করে সকল বন্ধীদের সামনে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং গালিগালাজ করেন। বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে নিতে না পেরে আজ ১৫ জুন রবিবার সকাল আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় সূর্যমুখী সেলের অভ্যন্তরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। পরবর্তীতে মৃতদেহকে ডান্ডাবেরি পড়িয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্তব্যরত এক কারারক্ষী জানান যে, কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুম এখানে বদলি হয়ে আসার পর থেকেই বিভিন্ন বন্দিদের কাছ থেকে বিশেষ করে কারাগারে আটক আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা যারা বিভিন্ন মামলায় আটক আছেন, তাদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছেন। কেউ চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তল্লাশির নামে তাকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন করা হয়। জেলার মাসুমের মাত্রা অতিরিক্ত অত্যাচার নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে কারাগারে আটক হাজতী বন্দী বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন চাঁদা দাবি করে। তবে বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নিয়মিত টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে গত ১৩ জুন শুক্রবার রাত্রে মোবাইল ফোন উদ্ধারে নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। এই লজ্জা তিনি মেনে নিতে না পেরে বন্দি চেয়ারম্যান কারাগারের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। উল্লেখ্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুম ও জেল সুপার সুরাইয়ার দুর্নীতি এবং বন্দীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে বন্দীদের একাংশ ক্ষিপ্ত হয়ে জেলার মাসুম ও জেল সুপারকে আক্রমণ করে। এর জের ধরে প্রায় আনুমানিক ১০০০ বন্দীদের শারীরিক ভাবে মারপিট ও নির্যাতন করে ২৪ ঘন্টা কারা অভ্যন্তরে বিশেষ রুমে আটকে রেখে পরবর্তীতে প্রায় ১০০০ বন্দীকে শাস্তিমূলক ভাবে কাশিমপুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অস্ত্র হাতে ছাত্র জনতার উপরে হামলার ভিডিও ফুটেজ আছে। এই বছরে প্রথমার্ধে উত্তরা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কে জানায় কারাগারে বন্দি চেয়ারম্যানের মৃতদেহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। পোস্টমর্টেম শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।