প্রতিদিনের স্বদেশ ডেস্কঃ
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত সম্প্রতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। স্থলভাগে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী যুদ্ধের পরবর্তী গতিপথ ঠিক করে দিচ্ছে। যুদ্ধ কৌশল প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হওয়ার হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি সামনে কী ঘটতে যাচ্ছে তার ওপর নজর রাখা জরুরি।
রুশ বাহিনী ইউক্রেনের পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তীব্র রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী কোনভাবে প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে, বিশেষ করে দোনেৎস্ক অঞ্চলে। শরতের আগে আভিডিভকা নামক অঞ্চলের পতন এবং বিশাল ৩-টন এফএবি গ্লাইড বোমা ব্যবহারের পর এমন সফলতা এসেছে রুশ বাহিনীর পক্ষে। তারা ইউক্রেনীয় সামরিক ইউনিটগুলোকে বিপর্যস্ত করতে চারদিক থেকে ঘেরাও করার জন্য পিন্সার পদ্ধতি এগিয়ে যাচ্ছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে ভুলেদার, চসিভ ইয়ার এবং টোরেটস্কে অঞ্চলে প্রতিপক্ষের মূল সরবরাহ রুটগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সুউচ্চ চাসিভ ইয়ার অঞ্চলকে দখল করা গেলে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামতোর্স্কের দিক পর্যন্ত সমতল ভূমিতে আর বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবে রুশ বাহিনী।
দোনেৎস্কো ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সামনের অঞ্চলগুলো অনেকাংশে স্থির থাকে। একের পর এক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে আরও চাপে ফেলে দিচ্ছে। চলমান অচলাবস্থা সত্ত্বেও মস্কো বাহিনী ধীর কিন্তু স্থিরভাবে ভূমির নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে নিচ্ছে। এতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওপর চাপ অব্যাহত রয়েছে।
রাশিয়ার কৌশলের মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনীয় সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়া। এটি প্রয়োগে সফল হলে ইউক্রেনের পক্ষে রণক্ষেত্রে সামনের সারির অবস্থান ধরে রাখার ক্ষমতা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে।প্রতিপক্ষ ইউক্রেনের ওপর শক্তি ক্ষয়ের কৌশল প্রয়োগ করছে রুশ বাহিনী। এমন প্রতিকূলতা উতরে ইউক্রেনীয় বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগত অবস্থানগুলোতে নিজেদের অবস্থান অক্ষুণ্ণ রেখেছে। কিয়েভের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ায় মূল ভূখণ্ডের অনেক গভীরে হামলা অব্যাহত রাখা, জ্বালানি শক্তির অবকাঠামো লক্ষ্য করে ড্রোন ও রকেট হামলা চালানো। এমন কৌশলগত হামলা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতাকে বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরছে।
যাইহোক, দীর্ঘমেয়াদে এই কৌশলের কার্যকারিতা নির্ভর করছে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রস্তুতির ওপর। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্বীকার করেন ১৬ ব্রিগেডের মধ্যে মাত্র দু’টি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এতে বোঝা যায়, মিত্র পশ্চিমাদেশগুলোর সরবরাহ সময় মতো হচ্ছে না যাতে উদ্বেগ বাড়ছে।
পরিবর্তিত সামরিক কৌশলের সঙ্গে ইউক্রেনীয় বাহিনীর দ্রুততার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতার উপর নির্ভর করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে কিয়েভ।