বেতাগী বরগুনা প্রতিনিধি:
১৯৯ টি আবেদন রেজিষ্ট্রার সম্পূর্ণ করা, ৯৯ টি আবেদনকৃত অবস্থায়, ১৫ টি আবেদন করে দিয়েছি ও ১টি ডেলিভারি করা হয়েছিল।
বরগুনার বেতাগীতে মোকামিয়া ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) এক উদ্যোক্তার কম্পিউটারে বিভিন্ন জেলার আন্তত ৩১৪ টি জাল জন্মনিবন্ধন পাওয়া গেছে। জন্মনিবন্ধনের জাল সনদ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই উদ্যোক্তাকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশে সোপর্দ করেছেন বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ। আটক উদ্যোক্তার নাম মো. আরিফুর রহমান মাতুব্বর (৩১)। তিনি উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের উত্তর করুণা গ্রামের মো: ফরিদ মাতুব্বরের ছেলে। বেতাগী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে মোকামিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় পরিদর্শনে যান বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ। এ সময় ইউডিসির উদ্যোক্তার কাছে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চান। পরে উদ্যোক্তা আরিফুর রহমানের কম্পিউটার তল্লাশি করে ফেনী, ময়মনসিংহ, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মোট ৩১৪টি জাল জন্মনিবন্ধনের কাগজপত্র পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৯৯ টি জন্ম নিবন্ধন কম্পিলিট হয়েছে। ৯৯ টি আবেদন অবস্থায় আছে ১৫ টি রিজেক্ট করে দিয়েছি। চলতি মাসের ১ থেকে ৫ তারিখ পাঁচ দিনে মোকামিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সচিব ও চেয়ারম্যানের আইডি ব্যবহার করে এসব জন্মনিবন্ধনের সনদ তৈরি করেন আরিফুর রহমান। এত অল্প সময়ে এতগুলো জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির বিষয়ে কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেননি আরিফুল। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে তাঁকে আটক করে পুলিশ। তবে যাদের নামে জন্মনিবন্ধন হয়েছে, তারা বাঙালি না রোহিঙ্গা তা নিশ্চিত হতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে এসব জন্মনিবন্ধন বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মোকামিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী জালাল আহমেদ বলেন, ‘এত কম সময়ের এতগুলো জন্মনিবন্ধন তৈরি করার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তথ্যসেবা কেন্দ্রের দায়িত্বরত ছেলেটি আমার ও সচিবের আইডি ব্যবহার করে এসব করেছে। এমন ঘটনা আর কখনো হয়নি। এতে আপনার কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন না এতে আমার সম্পৃক্তাতা থাকার কোন প্রশ্নই আসে না।
মোকামিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সুভ্রত বলেন আমি মাত্র ২ মাস হয়েছে মোকামিয়া পরিষদে এসেছি আমি আসার আগেই আরিফুলের কাছে আমাদের পরিষদের জন্ম নিবন্ধন এর আইডি ছিল আর জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন গুলি সব আরবফুল নিজেই করতেন। সচিব ছাড়া এই কাজ তো শুধু (ইউডিসি) বা উদ্যোক্তার একার পক্ষে করা সম্ভব না বিষয় জানতে চাইলে সচিব প্রতিদিনের স্বদেশকে বলেন যদি ইউনিয়ন পরিষদের জন্মনিবন্ধন এর আইডি কারো কাছে থাকে আর তার যদি এই কাজ জানা থাকে তাহলে তিনিই জন্মনিবন্ধণের কাজ করতে পারবেন। আরিফুল চেয়ারম্যান ও আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে এই কাজ করেছেন।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী আফিসার (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, মোকামিয়া ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রে অস্বাভাবিকহারে জন্মনিবন্ধন তৈরির বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে সেখানের দায়িত্বরত ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এসব জন্মনিবন্ধন করা ব্যক্তিদের বর্তমান ঠিকানা বা জন্মস্থান বেতাগীতে নয়। একেক জনের জন্মস্থান একেক স্থানে। এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা পুলিশ তদন্ত করে বের করবে।
এ বিষয়ট বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরামুল হক বলেন ভুয়া জন্ম নিবন্ধন করার মোকামিয়ক ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোঃ হাসিব বাদী হয়ে একটি মামলা করলে আরিফুর কে গ্রেফতার দেখিয়ে কোটে চালান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আরো কেহ জরিত আছে কিনা সেটা তদন্ত হচ্ছে এবং আরিফুর কে জিগ্যেসবাদ করা হবে। তবে এখই বলা যাচ্ছে না যে এতে আরো কেহ জরিত আছে কিনা।